উৎসবে-আনন্দে হবিগঞ্জে হামজা চৌধুরীকে বরণ

স্পোর্টস ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১৮ মার্চ, ২০২৫ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

হবিগঞ্জের সন্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া জাগানো ফুটবল খেলোয়াড় দেওয়ান হামজা চৌধুরী নিজের গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন। মা, স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে গতকাল সোমবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপর সড়ক পথে তিনি হবিগঞ্জে এসে পৌঁছান বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে। এর আগেও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে এসেছিলেন হামজা চৌধুরী। তবে এবার তার আসায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এবার তিনি এসেছেন নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলতে।

আগামী ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বছাই পর্বে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হবে হামজা চৌধুরীর। দেশের হয়ে খেলতে এসেছেন, তাই আনন্দের শেষ নেই হবিগঞ্জেবাসীর। বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। হামজাকে বরণে পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়। বাড়ির প্রবেশ পথেও তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা সারার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে একটি মঞ্চ। অতিথিদের আপ্যায়নে রান্নাবান্নার আয়োজনও করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলতে আসা এই ফুটবলারকে অভিবাদন জানাতে কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন। পুটিজুরি বাজারে পৌঁছেই গাড়ির উপরের অংশের ঢাকনা খুলে বের হয়ে পড়েন হামজা। এসময় হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। হামজাকে দেখে স্লোগান তুলতে থাকেন উৎসুক জনতা। কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জনসমুদ্রে পরিণত হয় এলাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনসমুদ্র সামাল দিতে হিমশিম খায়। বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে নিজ বাড়িতে পৌঁছান হামজা। বাড়িতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হলেও মানুষের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। অনেকেই বাড়ির বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। হামজা মঞ্চে উঠে হাত নাড়িয়ে দিলেন ‘বাংলাদেশবাংলাদেশ’ স্লোগান বিকেল পৌনে ৪টায় স্ত্রীসহ ঘরে নেওয়া হয় হামজাকে। বধূকে বরণ করতেও নানা আয়োজন করা হয়। ফুলের মালা, ফিতা কাটা, ফুল ছিটানোর আয়োজন ছিল। পরিবারের সদস্যরা ঘরোয়া পরিবেশে হামজাকে ঘরে তোলেন, বরণ করেন বধূকে।

বেশ কযেকবার দেশে এসেছেন দেওয়ান হামজা চৌধুরী। দেড় বা ২ বছর বয়স থেকেই তার দেশে আসা শুরু; কিন্তু এবারের আসাটা ভিন্ন। সাথে আসছেন স্ত্রী, সন্তানরাও। তাদের জন্য বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর। বধূ প্রথমবার আসছেন শ্বশুরালয়ে। তাই বিদেশি বধূকে বরণে ব্যাপক আয়োজন করেছেন স্বজনরা। বাড়ি সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। বাড়ির প্রবেশপথসহ পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পোস্টার, ফেস্টুন তো আছেই। লাইটিং করা হয়েছে পুরো বাড়িতে। আগত অতিথিদের ইফতারও করানো হয়। বাড়ির পাশে খালি জায়গায় ছোট একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ছোট্ট পরিসরে তিনি আগত অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। হামজা চৌধুরীর চাচা দেওয়ান মাসুদ বলেন, ২০১৪ সালে সর্বশেষ দেশে এসেছিল হামজা। ২০২২ সালে সে বিয়ে করে। এরপর আর তার দেশে আসা হয়নি। আমরা আনন্দে উদ্বেলিত। ভাতিজার সাথে এবার তার স্ত্রী এবং নাতি, নাতনিদের আমরা দেখবো। মূলত তাদের বরণ করতেই বাড়ি সাজানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে, যা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। শুধু আমাদের বাড়ি নয়, জেলাজুড়ে মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাহিদ রানাকে পিএসএল খেলতে বললেন শান্ত
পরবর্তী নিবন্ধচান্দগাঁওয়ে ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার