ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি থাকবে কিনা, এই প্রশ্নে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে উপাচার্যের বৈঠকে আলোচনা ছাপিয়ে গেল জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির পরিচয় প্রকাশ নিয়ে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে দুই দফায় আলোচনা করে। বেলা ১১টায় প্রথম দফায় আলোচনা হয়।
এই আলোচনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের আহ্বায়ক কমিটির সাজেদুল ইসলাম ও প্রজ্ঞা চৌধুরী, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের পক্ষ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আতিক চৌধুরী, নৃবিজ্ঞানের নাইম উদ্দিন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের আদনান আজিজের পাশাপাশি ছিলেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম ও সাহিত্য সম্পাদক রেজাউল করিম শাকিল। খবর বিডিনিউজের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের কেউ এই প্রথম নিজের পরিচয় প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সাদিক কায়েম নিজেই তার রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করেন, যিনি এতদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নানা কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থাকতেন।
গত ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্য নেতাদের সঙ্গে তিনিও যান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। একাধিক উপদেষ্টার পাশেও দেখা গেছে তাকে। নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার পরেও তার পাশেও দেখা গেছে সাদিককে।
এই বৈঠকের পরে সাদিক নিজের ফেইসবুক পাতায় ছাত্র রাজনীতি নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরে একটি পোস্ট দেন, সেখানেও তিনি তার রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরেন। তার পরিচয় প্রকাশ তুমুল আলোচনা তৈরি করেছে। সাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬–১৭ সেশনের ছাত্র। তিনি মাস্টার্স পাস করেছেন, থাকতেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলে। উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাদিক বলেন, আমরা শুধু আলোচনা করেছি। এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আমাদের প্রস্তাব ছিল আমরা রাজনীতি বন্ধ চাই না, আমরা রাজনীতির সংস্কার চাই। আমরা মেধার ভিত্তিতে ছাত্র রাজনীতি চাই। ছাত্ররা দেশ গড়বে। বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটু স্থিতিশীল হলেই দ্রুত ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
সাদিক কায়েমের রাজনৈতিক পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এটা উনি নিজেই পরিচয় দিয়েছেন। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিংয়ে উনি ছাত্রশিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় আলোচনা হয় দুপুর ২টায়। এতে অংশ নেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সরকার সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। শিপন বলেন, ছাত্রলীগের যে দীর্ঘদিনের রাজনীতির নামে হল দখল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছিল, এগুলোই শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্র রাজনীতি মনে হয়েছে।