সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব ফখরুলের এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আজকে বলা হচ্ছে যে, এই সরকার যথেষ্ঠ উন্নয়ন করেছে, তারা নিজেরাই নিজেদের কথা বলছে এবং তারা নিজেদেরকে একটা উন্নয়নের রোল মডেল বলছে। আজকের পত্রিকায় আছে যে, ইউএনডিপি গতকাল যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, গোটা এশিয়াতে কী অবস্থান, কোন কোন দেশের কী অবস্থায় আছে। তাতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়াতে পঞ্চম, ভুটানেরও নিচে। খবর বিডিনিউজের। ফখরুল বলেন, এখানেই বোঝা যায় যে, আসলে আমাদের উন্নয়নের কথা যেটা বলা হচ্ছে, এটা পুরোপুরিভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা। উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা ক্ষমতায় জোর করে টিকে থাকতে চায়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সব ক্ষেত্রে দলীয়করণের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, তারা অর্থনীতিকে আজকে একটা লুটপাটের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। তারা পার্লামেন্টকে পুরোপুরি একটা অকেজো পার্লামেন্ট তৈরি করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে।
আপনারা দেখেছেন যে বিশিষ্ট নাগরিকরা, তারাই বক্তব্য রাখছেন, বলছেন যে এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির ‘জাতীয় কমিটির’ সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি। আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে মূল চেতনা নিয়ে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি, যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি, আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ, তারা শহীদ হয়েছেন, মা-বোনেরা তারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন…। সেই গণতান্ত্রিক চেতনাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং গণতন্ত্রের জন্য যারা সেদিন লড়াই করেছিলেন, যুদ্ধ করেছিলেন, তাদের সেই মর্যাদাটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা।
অবশ্য বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের কাছে গিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা কতটা কীভাবে পালন করা যাবে, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, করোনার প্রতিকূলতা ও বর্তমানে রাজনৈতিক যে পরিবেশ, আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি এবং স্বাধীনতার মূল চেতনাকে যারা আমরা ধারণ করি, লালন করি, তাদের জন্য কোন পরিবেশে কীভাবে আমরা পালন করতে সক্ষম হব, সেটাও আমরা জানি না।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১৫টি বিষয়ভিত্তিক কমিটি এবং ১০টি বিভাগীয় কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কমিটির সদস্য সচিব আব্দুস সালামও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।