চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ভারতের আগরতলায় পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে এক বছর আগে নির্মিত হয় আখাউড়া–আগরতলা রেলপথ। চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়া আগে থেকে ডাবল রেলপথ রয়েছে। গত বছরের ১ নভেম্বর রেলপথটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের প্রায় এক বছরের কাছাকাছি সময়েও এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৭৮ কোটি টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলসংযোগ ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে রেলপথে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। এই প্রকল্পের প্রায় টাকা দিয়েছে ভারত সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
রেললাইন প্রকল্প নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যে পাথর আমদানি হয় সেগুলো আসে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে। আমদানি করা পাথর প্রথমে ট্রেনে করে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার জিরানীয়া স্টেশনে আনা হয়। এরপর সেখান থেকে ভারতীয় ট্রাকে করে বাংলাদেশে আনা হয়। ভারতীয় ট্রাক পাথর রেখে যাওয়ার পর বাংলাদেশি ট্রাকে করে নেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে বাংলাদেশে আর একাধিকবার পরিবহনের মাধ্যমে পাথর আমদানি করতে হবে না। ভারতের মেঘালয় থেকে সরাসরি পাথরবাহী ট্রেন চলে আসবে বাংলাদেশে। পাথরের উদাহরণ হিসেবে দেওয়া আমদানি বাণিজ্যের পাশাপাশি রপ্তানিতেও ভালো কিছুর অপেক্ষায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলপথে ভারতের ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালিত হবে। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে কন্টেনারবাহী পণ্য ভারতের আগরতলা যাবে। সেখান থেকে ভারতের অন্যান্য অঙ্গ রাজ্যে যাবে। প্রকল্পের শুরুতেই বলা হয়েছিল–এই রেলসংযোগের আওতায় অর্থনীতিতে নীরব বিপ্লব সাধিত হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে বসেছে। এই রেলপথে গত এক বছরেও ট্রেন চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী গতকাল আজাদীকে বলেন, গত বছরের ১ নভেম্বর উভয় দেশের রেলপথ উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো দুই দেশে ট্রেন চালুর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারতের ওইদিকে সব কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের এদিকেও সব কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম–আখাউড়া–আগরতলা রেলপথে দুই দেশের সম্মতিতেই ট্রেন চালু হবে।