পটিয়া কালারপোল ওহিদিয়া সেতু। দীর্ঘ ১৪ বছরের প্রতীক্ষা ও দুর্ভোগের প্রহর ঘুচিয়ে এটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে সেতুর দুই পাড়ের হাজারো মানুষের মাঝে বিরাজ করছে অন্যরকম এক আনন্দের আমেজ। সেতুটি উদ্বোধন হলে কমবে দুই পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ। উন্নত হবে চট্টগ্রামের সাথে পটিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর আগে এখানে যাতায়াতের জন্য বেইলী ব্রিজ ও কাঠের সেতু ব্যবহার করা হতো। এটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে নৌকায় ছিল মানুষ পারাপারের একমাত্র অবলম্বন। পরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মইজ্জারটেক-বোয়ালখালী-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা জেলা মহাসড়কের এ কালারপুল সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পের আওতায় ১৮০.৩৭৩ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতু সংশ্লিষ্ট সড়কে শিকলবাহা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, এস আলম কোল্ডরোল্ড স্টিল, ফোর এইচ গ্রুপের পোষাক শিল্প কারখানা, ওয়েস্টার্ণ মেরিন শীপ ইয়ার্ডসহ আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেতুর পূর্বাংশ (পটিয়া উপজেলা) কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়কের সাথে এবং পশ্চিমাংশ মইজ্জারটেক হয়ে চট্টগ্রাম শহরের সাথে সংযুক্ত হওয়ায় এটি জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এছাড়া সেতুটি নির্মাণ করায় মইজ্জারটেক-বোয়ালখালী-কানুনগোপাড়া-উদরবন্যা সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। একই সাথে যাতায়াতের সময় ও আর্থিক সাশ্রয়ও হবে স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী এমপি বলেছেন, নবনির্মিত কালারপোল সেতুটি শীঘ্রই যানচলাচল উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। এ সেতু নির্মাণের ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও নগরীর সাথে পটিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক রচিত হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সন্নিহিত এলাকার দুর্ঘটনা হ্রাস ও যানজট নিরসনকল্পে ও নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ সেতুটি এলাকার জনগণের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি বর্তমানে পটিয়ার গৃহীত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যোগ হলো সফলতার আরও একটি নতুন মাত্রা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত সেতুটি ২০১৭ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হয় গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে। এটির দৈর্ঘ্য ১৮০.৩৭৩ মিটার (পিসি গার্ডার)। সেতুতে ৪ স্পেন বসানো হয়েছে এবং ৫৫০ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হয়। সেতুতে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয় ১৫০ মিটার।
এ বিষয়ে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী চলতি অক্টোবর মাসে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। সেতুটির মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দুই পাশের হাজারো মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন সুবিধা হবে, তেমনি কর্মঘণ্টা ও খরচ কমবে।