উত্তাল সাগরে সন্দ্বীপবাসীর ঝুঁকির যাত্রা

সন্দ্বীপ প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৪:২৩ পূর্বাহ্ণ

চার লাখ দ্বীপবাসীর নদীপথে যাতায়াতের জন্য বিআইডব্লিউটিসির একটি মাত্র জাহাজ এমভি আইভি রহমান। বলা যায় সন্দ্বীপবাসীর জন্য একমাত্র নিরাপদ নৌ যান। আবার অন্যান্য নৌযানের তুলনায় জাহাজের ভাড়া কম হওয়ায় (১৪০ টাকা) সাধারণ যাত্রীরা খরচ বাঁচাতে এ সরকারি স্টিমারের উপর নির্ভরশীল। যদিও এটি দিনে মাত্র ট্রিপ (আসাযাওয়া) দেয় একবার। সকাল ৭টায় সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে যায় চট্টগ্রামের কুমিরা ঘাটের উদ্দেশে। আর ১০টায় কুমিরা থেকে গুপ্তছড়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ৫০০ করে যাত্রী পারাপার করে এক হাজার জন। তবে কখনো কখনো এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ঘাটে যাত্রীদের ভিড় থাকলে।

তবে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বিআইডব্লিউটিসির জাহাজের সার্ভিস বন্ধ রয়েছে কুমিরাগুপ্তছড়া নৌরুটে। জাহাজের পাখা মেরামতের জন্য কর্ণফুলী ডক ইয়ার্ডে রয়েছে জাহাজটি। কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লাগবে মেরামত কাজে। সে হিসাবে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ ১৫ দিন এখানে জাহাজ সার্ভিস বন্ধ থাকবে। অক্টোবরের শুরুতে আবার এ নৌরুটে জাহাজটি চলাচল শুরু করবে। একদিকে বাতাসের কারণে সাগর উত্তাল অন্যদিকে জাহাজ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে হচ্ছে কখনো কাঠের তৈরি মালবাহী ট্রলার ও সার্ভিস ট্রলারে আবার কখনো স্পিডবোটে। তবে সাগর অত্যধিক উত্তাল থাকলে বন্ধ হয়ে যায় স্পিডবোটের চলাচল। তখন যাত্রীদের ভরসা করতে হয় মধ্যযুগীয় বাহন কাঠের ট্রলারগুলোতে।

বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ এমভি আইভি রহমানের কমিশন এজেন্ট ইকরাম উদ্দিন ফরহাদ গতকাল শুক্রবার দৈনিক আজাদীকে জানান, জাহাজের পাখা মেরামতের জন্য এ মুহূর্তে এটি কর্ণফুলী ডকইয়ার্ডে রয়েছে। আরো ৭৮ দিন লাগবে মেরামতের কাজ শেষ হতে। প্রতিনিয়ত উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এ নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, যদিও জাহাজে উঠানামা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ভোগান্তি হলেও প্রচন্ড ঢেউ আর বাতাসে জাহাজই সবচেয়ে নিরাপদ নৌযান। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে জাহাজের ট্রিপ বন্ধ থাকে। যার কারণে আমাদেরকে ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ নৌযানে করে বাধ্য হয়ে সাগর পাড়ি দিতে হয়। এছাড়া একটি মাত্র জাহাজের শুধু সকালে ট্রিপ থাকায় দিনের বাকি সময় ও রাতে দ্বীপের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান বলেন, সাগর উত্তাল ও প্রচন্ড বাতাস থাকার পরও পাখা অকার্যকরএমন অজুহাতে কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়া গুপ্তচরাকুমিরা নৌপথে জাহাজ বন্ধ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যে দুষ্টচক্র সবসময় এই পথে জাহাজ অকার্যকর রাখার চেষ্টা করে এবার তারা যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। এছাড়া তিনি অনতিবিলম্বে জাহাজ চালুর জোর দাবি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধশঙ্খের বিভিন্ন অংশে ধসে পড়েছে প্রতিরক্ষা বাঁধ