উচ্ছেদ হয়, তবে দখলদার সরে না

সিআরবির কাছে রেলের জায়গায় গোয়ালপাড়া তুলাতলি বস্তি ৩.৩০ একর জমি দখল করে ১৪শ ঘর

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৮ মে, ২০২৫ at ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবির কাছে প্রভাবশালীদের গড়ে তোলা নগরীর আলোচিত গোয়ালপাড়া তুলাতলী বস্তি উচ্ছেদ করা হলেও এই বস্তির অবৈধ দখলদাররা কোথাও যায় না। উচ্ছেদের পর আবার পূর্ণ উদ্যমে চলে তাদের দখল রাজত্ব।

২০২২ সালের ২০ ও ২১ মার্চ টানা দুদিনের অভিযানে রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ গোয়ালপাড়া তুলাতলী বস্তির ১৪শ বস্তিঘর উচ্ছেদ করেছিল। উচ্ছেদের পর সপ্তাহ পার হওয়ার আগেই অবৈধ দখলদাররা যার যার দখলকৃত জায়গায় পূর্বের আদলে পুরো এলাকায় বস্তি ও দোকান ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। এখানে অধিকাংশ বস্তিঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিআরবির সবুজ পাহাড় আর প্রকৃতির কোল ঘেঁষে বছরের পর বছর রেলের বিপুল পরিমাণ মূল্যবান জমি দখল করে তিনটি অবৈধ বস্তি গড়ে উঠেছে। এই তিনটি বস্তি হলো তুলাতলী বস্তি, মালিপাড়া ও গোয়ালপাড়া বস্তি। সরেজমিনে তিনটি বস্তি ঘুরে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বস্তিগুলোর বেশিরভাগ দখলদার রেলের কর্মচারী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং রেলের সাবেক কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। তবে বেশ কিছু স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীও রয়েছেন।

গত দুদিনে সরেজমিনে তিনটি বস্তি ঘুরে দেখা যায়, তিনটি বস্তি এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজারের মতো সেমিপাকা ও কাঁচা ঘর এবং দোকানসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এ বস্তিগুলোর একেকটি নগরীর সিংহভাগ অপরাধ ও মাদকের রাজ্য। এখানে থাকার ঘরের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে মুদির দোকান, চায়ের দোকান, বিউটি পার্লার, কোচিং সেন্টার, রিকশার গ্যারেজ, স্টোর রুম, স্থানীয়দের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিস। দিনেরাতে বসে জুয়ার আসর।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৭ মার্চ তুলাতলী এলাকায় বস্তিতে রেলের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে স্থানীয় দখলদারদের হামলায় রেলের এক প্রকৌশলীসহ ৮ জন আহত হয়েছিলেন। ২০২২ সালে ২০ ও ২১ মার্চ টানা দুদিনের অভিযানে তুলাতলী বস্তির ১৪শ বস্তিঘর উচ্ছেদ করা হয়েছিল। দুদিনের অভিযানে ৩ হাজার ৬৫০ জন অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে ৩ দশমিক ৩০ একর জমি উদ্ধার করে রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগ।

রেলের জমিতে গড়ে ওঠা তুলাতলী, মালিপাড়া ও গোয়ালপাড়া বস্তি তিনটি চারদিক থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা হওয়ায় এখানে থাকার জন্য নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষদের চাহিদা বেশি। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এ বস্তিগুলো গড়ে ওঠায় রেলওয়ে বস্তিগুলো সহজে উচ্ছেদের তালিকায় রাখে না। যখনই উচ্ছেদে যায় তখনই রেলের কর্মকর্তাকর্মচারীদের ওপর হামলা করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশের মাথাপিছু আয় ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮২০ ডলার
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরে ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার ঘোষণা আসতে পারে : প্রেস সচিব