আষাঢ় মাস শুরু হতে বাকি আর আট দিন। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষাকালের যাত্রা। বর্ষা অনেকের জন্য আনন্দের হলেও কারো কারো জন্য বয়ে আনে দুঃখ, দুশ্চিন্তা। বিশেষ করে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতির কথা বলতে হয়। প্রতিবছর বর্ষায় পাহাড় ধস, দেয়াল ধসসহ নানা রকমের দুর্ঘটনার দেখা মেলে। সেজন্য সচেতনতা তৈরিতে পূর্ব থেকেই প্রশাসনও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। এবারও রোজার ঈদের পর পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার কথা ছিলো। তবে আলোর মুখ দেখেনি সেই অভিযান। কবে অভিযান পরিচালিত হবে তাও এখনো ঠিক করা হয়নি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা ও বসতি নিয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির গত সভায় আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যেখানে উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার কথাটাও ছিল। তবে এখন পর্যন্ত অভিযান পরিচালিত হয়নি। কবে পরিচালিত হবে তাও বলতে পারছি না। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সভা হয়নি। সভার মাধ্যমে হয়তো জানা যাবে।
ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা, বসতির তালিকা রেলওয়েসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। জেনে জানাতে পারব। গত ২৭ মার্চ পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৩ তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছিলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা, বসতি উচ্ছেদে অভিযান চালাবে প্রশাসন এবং সেটি রোজার ঈদের পর পরই। এ জন্য রেলওয়েসহ সংশ্লিষ্টদের ১৫ এপ্রিলের মধ্যে দিতে হবে অবৈধ স্থাপনার তালিকা।
এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মো. নাজমুল আহসান, রেলওয়ে, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, পিডিবিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় কমিশনার সে সভায় বলেন, বর্ষা ঘনিয়ে এলেই চট্টগ্রামের পাহাড় নিয়ে একটা আতংক দেখা দেয়। পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা, বসতি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও এ সময় বড় আকারে সামনে চলে আসে। আমরা একটা স্থায়ী সমাধান চাচ্ছি। বাইপাস রোডের (বায়েজিদ ফৌজদারহাট লিংক রোড) ৯০ ডিগ্রি খাড়া পাহাড় সোজা করতে হবে। এ জন্য সিডিএসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্ষায় কারো মৃত্যু হোক তা আমরা চাই না। সবার সহযোগিতা পেলে এ বছর আমরা পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা ও বসতি সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করতে সক্ষম হব।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি পাহাড় ধ্বসে, দেয়াল ভেঙে, পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে ১২৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম জেলায় ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন। ২০১৫ সালের ২ জুন পাহাড় মালিক, সংস্থার সাথে অনুষ্ঠিত সভার আলোকে ইস্পাহানি পাহাড় এবং জেমস ফিনলে পাহাড়ের নাম ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২৮ টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের তালিকা করা হয়।












