কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদে হাবিবুল হুদা চৌধুরী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত শুক্রবার তারাবির নামাজের পর ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদার পাড়াস্থ নিজ বাড়িতে হত্যার শিকার হন তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন। নিহত হাবিবুল হুদা জুলাই গণ–আন্দোলনের ঈদগাঁও উপজেলার সমন্বয়ক সাদিদ হুদার পিতা।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ঈদগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক পক্ষের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল হাবিবুল হুদা চৌধুরী পক্ষের। এই নিয়ে দীর্ঘদিন উভয়পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর মধ্যে গণ–আন্দোলনে ঈদগাঁও উপজেলায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন হাবিবুল হুদা চৌধুরীর পুত্র সাদিদ হুদা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইসলামাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক গণ–আন্দোলনে ছাত্র–জনতার উপর হামলা চালান। এ নিয়ে হাবিবুল হুদা ও আবদুর রাজ্জাকের দ্বন্দ্ব আরো তীব্র হয়। গণ–অভ্যুত্থানের পর ছাত্র–জনতার উপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। সম্প্রতি তিনি কারাগার থেকে বের হয়েছেন। ওসি জানান, কারাগার থেকে বের হয়ে চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ তুলেন, হাবিবুল হুদার পুত্র সমন্বয়ক সাদিদ হুদা তাকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধ আরো তীব্র আকার ধারণ করে। এর জের ধরে শুক্রবার দুপুর থেকে দুইপক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। সর্বশেষ তারাবির নামাজের পর আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে হাবিবুল হুদাকে হত্যা করা হয়। নিহতের পুত্র এডভোকেট আবিদুল হুদা জানান, আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একদল সশস্ত্র মুখোশধারী আকস্মিক আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা আমার বাবাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কঙবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় পরিবারের আরো দুই নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এদিকে এই খুনের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন কঙবাজারের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর থেকে তারা কঙবাজার শহর ও ঈদগাঁওতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এতে দ্রুত সময়ে প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। না হয় আরো বড় ধরনের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, নিহতের মরদেহ কঙবাজার সদর হাসপাতালে রয়েছে। জমি বিরোধ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের জের থেকে এই হত্যাকাণ্ড। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনায় চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের লোকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।