ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদের আহ্বান জানিয়ে ফতোয়া জারি

| রবিবার , ৬ এপ্রিল, ২০২৫ at ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ১৭ মাস ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মুসলিম বিশেষজ্ঞ এক বিরল ধর্মীয় ফরমান বা ফতোয়া জারি করেছেন। তারা সমস্ত মুসলিম ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন। মিশরীয় ইসলামী পণ্ডিত ইউসুফ আলকারাদভীর নেতৃত্বাধীন ইসলামি সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারসের (আইইউএমএস) মহাসচিব ও প্রভাবশালী কুর্দি সুন্নি ইসলাম পণ্ডিত শেখ আলী আলকারাদাঘি গত শুক্রবার সমস্ত মুসলিম দেশকে তাদের ম্যান্ডেট অনুসারে ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধে অবিলম্বে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানান। খবর বাংলানিউজের।

শেখ আলী আলকারাদাঘি শরিয়া ও ফিকাহ এবং ইসলামী অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ। তিনি দোহার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া ও ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের আইনশাস্ত্রের অধ্যাপক। ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে তিনি প্রায় ১৫ দফা ফরমান বা ফতোয়া জারি করেছেন।

ফতোয়ায় আলী আলকারাদাঘি বলেন, গাজা ধ্বংস হওয়ার সময় আরব ও ইসলামি সরকারগুলোর সমর্থন দেওয়ার ব্যর্থতা ইসলামী আইন অনুসারে সেখানকার নির্যাতিত মানুষদের প্রতি বড় অন্যায়। গাজার মুসলমানদের নির্মূলের চেষ্টা করা কাফের শত্রু ইসরায়েলকে সমর্থন করা নিষিদ্ধ, তা সে যে ধরনের সমর্থনই করুক না কেন। ইসরায়েলিদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করা নিষিদ্ধ। সুয়েজ খাল, বাব আলমান্দাব, হরমুজ প্রণালী, অথবা অন্য কোনো স্থল, সমুদ্র বা আকাশপথের মতো বন্দর বা আন্তর্জাতিক জলপথ দিয়ে তাদের জন্য অস্ত্র পরিবহন সহজতর করা নিষিদ্ধ।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলারস যে ফতোয়া জারি করেছে, সেটিতে গাজার মুসলিমদের সমর্থনে দখলদার শত্রুর (ইসরায়েল) জন্য আকাশ, স্থল ও সমুদ্র অবরোধের দাবি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফরমান বা ফতোয়া হলো ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারী একজন সম্মানিত ব্যক্তির দেওয়া বাধ্যতামূলক ইসলামী আইনি রায়। এটি সাধারণত কুরআন বা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বাণী ও ইসলামী অনুশীলনের ওপর ভিত্তি করে প্রণয়ন করা হয়। ফতোয়ায় আলী আলকারাদাঘি মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের একজন। তার ফতোয়াগুলো পৃথিবীর ১৭০ কোটি সুন্নি মুসলিমের কাছে ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে।

কারাদাঘির ফতোয়াকে সমর্থন জানিয়েছেন আরও ১৪ জন ইসলামিক ব্যক্তিত্ব। তারা যেসব মুসলিম দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তি চুক্তি আছে সেগুলো যেন পুনর্বিবেচনা বা পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগ্রাসন নির্মূল ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় মুসলিমদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বাধ্য করতে মার্কিন মুসলিমদেরকে চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে রোডম্যাপ চায় বিএনপি ও হেফাজত
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্ব বাণিজ্যের রীতিনীতি গুঁড়িয়ে ট্রাম্পের ১০% শুল্ক নেওয়া শুরু