ইরাকের আল আসাদ সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া হামলায় অন্তত পাঁচ মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়াকে ইরানের রাজধানী তেহরানে গুপ্ত হামলা চালিয়ে হত্যা ও লেবাননে হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। খবর বিডিনিউজের।
এরপর থেকে ইরান ও তার মিত্ররা ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালাবে, এমন আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে ইরাকের মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।
ইরান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু ইসরায়েলকে সমর্থন দেয় তাই হানিয়া হত্যার দায়ও তাদের ওপর বর্তায়।
ইরাকের দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের আল আসাদ বিমানঘাঁটিতে দু’টি কাতিউশা রকেট ছোড়া হয়েছে। রকেটগুলো ঘাঁটির ভেতরে পড়েছে। ইরান হামাস নেতা হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে, কিন্তু এর সঙ্গে ইরাকে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা পরিষ্কার হয়নি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হামলায় যে পাঁচ মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর।
তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আহতের এই সংখ্যা জানানো হয়েছে, যে কোনো সময় তা পরিবর্তিত হতে পারে।
তাদের মধ্যে এক কর্মকর্তা বলেন, ঘাঁটির লোকজন হামলায় হওয়া ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে দেখছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, এই হামলার পর সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষমন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এই হামলাকে উত্তেজনার এক বিপজ্জনক বৃদ্ধি বলে একমত হয়েছেন তারা।
গত সপ্তাহে ইরাকে ইরানপন্থি যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই যোদ্ধারা ড্রোন দিয়ে ইরাকে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে অভিযোগ মার্কিন বাহিনীর। পেন্টাগন জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে আরও যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে তারা।
ইরান ও তার মিত্র গোষ্ঠী হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিরা একযোগে ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কাকে সামনে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কোনো হামলা থেকে মিত্র ইসরায়েলকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
এখন ইরান নিজের ঘোষণা অনুযায়ী ইসরায়েলে হামলা করে কি না, সেদিকে নিবিড় নজর রাখছে তারা।বিরল ঘটনা হলেও ইরাক একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মিত্র দেশ। দেশটিতে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে আবার ইরানের সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীগুলো ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর অংশ। গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইরাকে থাকা এই দুই পরস্পর বিরোধী বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকবার পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।