ইভিএমে বাড়তি সুযোগ জালিয়াতির সুযোগ নেই

প্রিসাইডিং অফিসারদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান ইসির সিনিয়র সচিবের

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ at ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ঝুঁকি আসবে না। নির্বাচনে প্রচুর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন থাকবেন। ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন। রাত্রেও তারা নিরাপত্তায় থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ ও স্থগিত করার ক্ষমতা প্রিসাইডিং অফিসারের। আর কারো নয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেন প্রিসাইডিং অফিসার চাইলে সাময়িক ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখতে পারেন। গতকাল শনিবার বিকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসারদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
তিনি বলেন, ইভিএম হলো একটি বাড়তি সুযোগ। ইভিএম থাকলে যারা ভোট দিচ্ছেন তাদের জন্য যেমন সুবিধা, তেমনি যারা নিচ্ছেন তাদের জন্যও সুবিধা। তাছাড়া ইভিএম এ ভোট হলে জালিয়াতি করার সুযোগ এবং ভোট বাক্স ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকে না। ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি বলে ইভিএম ব্যবহার করছি বিষয়টি এমন নয়। দুষ্ট লোকেরা যাতে কোনো সমস্যা করতে না পারে এবং সুন্দরভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্যেই ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এসময় তিনি ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের অনুরোধ জানান। যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রিসাইডিং অফিসারদের স্বাভাবিক থাকার পরামর্শ দিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, অনেকে ভোটকেন্দ্রে অনেকে বিশৃংখলা করতে পারেন। তারা প্রিসাইডিং অফিসারদের বিরক্ত করতে পারেন। কিছু লোক হঠাৎ করে এসে আপনাকে চাপ প্রয়োগ করল। কিন্তু এই নির্বাচন হচ্ছে যন্ত্রের সাহায্যে। এই যন্ত্রে চাপ দিলে ভেঙে যাবে. এই যন্ত্র কারো কথা শুনে না। অনেকে না জেনে অভিযোগ করেন। কিন্তু এটা সত্যি নয়। জাতির উপকারের জন্য এই যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইডিইএর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাসেম মো. ফজলুল কাদের ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান। বক্তব্য রাখেন জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান।
মতবিনিময় সভায় প্রিসাইডিং অফিসাররা নানা সমস্যা তুলে ধরে মতামত ব্যক্ত করেছেন। প্রিসাইডিং অফিসার মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রশিক্ষণের সময় শুধু ভাতা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা হয়। ৮-৯ ঘণ্টা প্রশিক্ষণের মধ্যে কোনো পানি কিংবা খাবার দেওয়া হয় না।
আরেক প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, প্রশিক্ষণের সময় বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে নির্ধারিত কেউ থাকবে না। কিন্তু মতবিনিময় সভায় বলা হয়েছে প্রত্যেক কেন্দ্রে একজন দক্ষ টেকনেশিয়ান থাকবেন। পরে আরেকজন বলে ভোটকেন্দ্রে যে টেকনেশিয়ান থাকবেন, তিনি যেন, সার্বক্ষণিক থাকেন।
প্রিসাইডিং অফিসার ও ব্যাংক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন খান বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছি। নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন থেকে ব্যাংক থেকে তালিকা চাওয়া হয় শাখা পর্যায় থেকে। চট্টগ্রামের ১২টি শাখার মধ্যে মাত্র দুটি শাখা থেকে প্রায় সবাইকে নির্বাচনী দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রত্যেক শাখা থেকে ২-৩ জন দায়িত্ব দেওয়া হলো ভালো হতো। আর আঞ্চলিক পর্যায় থেকে চাওয়া হলে কিংবা ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচিত ব্যাংক কর্মকর্তাদের তালিকা যাতে আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুলিপি দেওয়া হয়। পরে প্রধান অতিথি সিনিয়র সচিব বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এটি টোটালি রং ওয়ে। এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। ভবিষ্যতে বিষয়টি যাতে আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা চাওয়া হয় সে বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশনা দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৃত্যু ছাড়াল ৮ হাজার দেশে আরও ৪৩৬ জন শনাক্ত
পরবর্তী নিবন্ধজেসিআই বাংলাদেশের নতুন কমিটির যাত্রা শুরু