চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৬৫ লাখ টাকার গ্যাস চুরির প্রমাণ পেয়ে ৪৪১টি চুলার সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল)। গতকাল বুধবার কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী সারওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম ইপিজেড থানাধীন চানখালী ব্যাংক কলোনী রোডের আমির সাধুর বাড়ির জনৈক ছৈয়দ নুর ও তার ভাইদের মালিকানাধীন বাসাবাড়িতে এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় মহানগর পুলিশের একটি টিমও অভিযান দলকে সহযোগিতা দেয়।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, ইপিজেড থানাধীন চানখালী ব্যাংক কলোনী রোডের আমির সাধুর বাড়ির জনৈক ছৈয়দ নুরের নামে দুটি, শাহাদাৎ বিন সৈয়দ, রিয়াদ উদ্দিন এবং ফসিউল আলমের নামে একটি করে মোট ৫টি অনুমোদিত রাইজার রয়েছে। এইসব রাইজারের অনুকূলে এক বার্নার ও দুই বার্নার মিলে ২২৬টি সংযোগের অনুমোদন ছিল তাদের। কিন্তু ২১ অক্টোবর অভিযানে গিয়ে তাদের মালিকানাধীন ৯টি ভবনে ২১৫টি অবৈধসহ মোট ৪৪১টি সংযোগ পান কর্ণফুলী গ্যাসের কর্মকর্তারা। ওইদিনই সংযোগগুলো অস্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। দুইদিন পর গ্যাস আইনে ইপিজেড থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ বুধবার এসব সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাইজারগুলো তুলে নিয়ে সংযোগস্থল ওয়েল্ডিং করে দেয়া হয়। কর্ণফুলী গ্যাসের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই ৯ ভবনে তিন বছরে ৬৫ লাখ টাকার গ্যাস চুরি হয়েছে। চুরি যাওয়া গ্যাসের মূল্য বাদে গ্যাস আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ৪০ লক্ষ টাকা জরিমানাও আরোপ হতে পারে। এর আগেও ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসেও অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগে তাদের সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে দোষ স্বীকার করে ৩৮ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে তারা পুনসংযোগ নেন বলে জানিয়েছেন কেজিডিসিএল সংশ্লিষ্টরা।
কেজিডিসিএল এর মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী সারওয়ার হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ইপিজেড এলাকা সাময়িক বিচ্ছিন্ন করা ৪৪১টি চুলার সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। আজ (বুধবার) সকাল ১২টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। এরপর লাইনের সংযোগস্থলে ওয়েল্ডিং করে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা গত তিন বছরে যে পরিমাণ গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করেছে তার মূল্যমান হবে ৬৫ লক্ষ টাকা। জরিমানার জন্য ফাইল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গ্যাস চুরির অভিযোগে ২০১৭ সালেও তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। তখন ৩৮ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে পুনরায় সংযোগ নিয়েছিল। এখন যেহেতু আবারো গ্যাস চুরি করছে, সেক্ষেত্রে তাদের জরিমানা হবে দ্বিগুণ। এতে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মতো জরিমানা আসবে। চুরি করে ব্যবহার করা গ্যাসের দাম ও জরিমানা মিলে কোটি টাকার অধিক রাজস্ব আসতে পারে। তাদের কাছ থেকে এসব রাজস্ব আদায় করাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘জরিমানাসহ ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করার পর তারা নিয়ম মেনে পুনরায় সংযোগের আবেদন করতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে সংযোগ পাবে কিনা সেটা কেজিডিসিএল বোর্ডের এখতিয়ার।’