বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তার অনুসারীরা। গতকাল বুধবার প্রেসক্লাবে দাওয়াত ও তাবলীগের উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ সাথীদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরা হয়। লিখিত বক্তব্যে কাকরাইল মসজিদের খতিব আজিম উদ্দিন বলেন, তাবলিগ জামাতের আরেক পক্ষ জোবায়েরপন্থি দেশের কতিপয় উলামায়ে কেরামকে বিভ্রান্ত করে ও মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। খবর বিডিনিউজের।
তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব নিয়ে এর অনুসারীদের মধ্যে বিভেদ শুরু হয় কয়েক বছর আগে। এর একটি পক্ষে দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা, আরেকটি পক্ষ হল বাংলাদেশের কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারী। দুই পক্ষের অনুসারীরা নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়িয়ে পড়েন ২০১৯ সালে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুই বারে করার সিদ্ধান্ত নেন। মাঝে কোভিড মহামারীর কারণে ইজতেমা দুই বছর বন্ধও রাখা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে ফের ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বের আয়োজনে।
সোমবার মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে এবারে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। ওই সভায় সাদপন্থিরা এলেও জোবায়েরপন্থিরা ছিলেন না। এরপর মঙ্গলবার জুবায়েরপন্থিরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে। ওই সমাবেশ নিয়ে খতিব আজিম উদ্দিন বলেন, সেখানে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। সমাবেশে আসা ৯০ শতাংশ ব্যক্তি তাবলিগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় মন্তব্য করে এই খতিব বলেন, অধিকাংশ অবুঝ মাদ্রাসার ছাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে যেসব দাবি তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো হল : ১. ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা। ২. বিগত ৭ বছরের বৈষম্য দূর করে বিশ্ব ইজতিমার প্রথম পর্ব নিজামুদ্দীন মারকাযের অনুসারী মূলধারার তাবলিগি সাথীদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া। ৩. কাকরাইল মসজিদ ও বিশ্ব ইজতিমা ময়দানের বৈষম্য দূর করে তাবলিগের মূলধারার সাথীদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া। ৪. ২০১৮ সালে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে মূলধারার ২ সাথীকে হত্যা ও পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকা নিউ মার্কেটে ৩ সাথীকে হত্যা ও চার শতাধিক সাথীকে মারাত্মক আহত করার দায়ে জুবায়েরপন্থিদের নামে করা মামলার নিষ্পত্তি করা। ৫. সারাদেশের সব মসজিদে ধর্মীয় উসকানি ও ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়– এমন বক্তব্য নিষিদ্ধ করা।