পুতিনের সঙ্গে বাইডেনের বসার আগ্রহ এখনই আলোচনার শুরুর ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন না কূটনীতিকরা। নয় মাস ধরে চলা যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বসতে চান, তার মানে ঠিক কী দাঁড়ায়? অথবা তিন মাস আগে দায়িত্ব নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস যখন রুশ নেতার সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী ফোনে কথা বলেন, তার অর্থই বা কী বোঝায়?
কৃষ্ণসাগর পাড়ের যে যুদ্ধ সারাবিশ্বকে টলিয়ে দিয়েছে, এই খবরগুলো কি উদ্বেগাকূল সেই বিশ্ববাসীর কাছে আশা জাগানোর মতো? তার বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমটি লিখেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের শান্তি আলোচনা শুরু হতে চলেছে, বিষয়টি ঠিক এমন নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেমনটা বলেছেন- সেই শান্তি আলোচনা তখনই শুরু হতে পারে, যখন রুশ নেতা ইঙ্গিত দেবেন তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে ইচ্ছুক। আর এমনটি এখনও ঘটেনি। খবর বিডিনিউজের।
ক্রেমলিনের অভিযোগ, যুদ্ধের মধ্যে গত সেপ্টেম্বরের শেষে দখল নেওয়া ইউক্রেইনের কিছু অংশের উপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়নি ওয়াশিংটন। আর ইউক্রেনে পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহই কিইভে ‘কথিত’ অস্থিরতার পেছনে দায়ী; যা মূলত বোঝায় না যে তারা কোনো একটি আলোচনা বা অগ্রগতির পর্যায়ে আছে।কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চলা যুদ্ধ টানা নয় মাস পার হয়ে গেছে। আর ইউক্রেনে তীব্র শীত শুরু হচ্ছে। ফলে যুদ্ধে আরও বেশি মৃত্যু, ধ্বংস ও দুর্দশার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে পারে- শান্তি আলোচনা কখন শুরু হচ্ছে।
বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলির সাম্প্রতিক মন্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার পরামর্শ এসেছে। কিন্তু ওই বিষয়টি নিয়েই মার্কিন প্রশাসনের ভেতরে বিভাজনের ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে। তখন থেকে পশ্চিমা নেতারা স্বাভাবিকভাবে জোর দিয়ে বলছেন, কখন ও কীভাবে আলোচনা হবে তা ইউক্রেনের উপরই নির্ভর করছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ হোয়াইট হাউজে বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন,‘আমাদের ইউক্রেনীয়দের সম্মান দেখাতে হবে যে, তারা কখন ও কোন শর্তে তাদের অঞ্চল নিয়ে আলোচনা করবে।’ পশ্চিমা কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে জানাচ্ছেন, যুদ্ধ নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। তারা মস্কো থেকে অর্থপূর্ণ আলোচনার ইচ্ছার কোনো ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছেন না।
ইউক্রেন বাহিনীর অগ্রসর হওয়া এবং রাশিয়ার অভিযান একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ায় পশ্চিমারা বিশ্বাস করেন, রাশিয়া এখনকার তুলনায় আগামী মাসগুলোতে আরও দুর্বল অবস্থানে থাকবে।