আ. লীগের শান্তি সমাবেশ নিয়ে প্রশ্ন খসরুর

মহানগর বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি আমরা রাস্তায় আছি এবং থাকব : মীর নাছির

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, তারা ছুরি, লাঠি, স্টাম্প নিয়ে শান্তি সমাবেশ করছে। ওরা নাকি জনগণের সম্পদ রক্ষা করবে। শান্তি রক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ থাকবে, না হয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা

 

থাকবে। দুইটা তো একসাথে থাকতে পারে না। দেশে যদি আইন থাকে তাহলে পুলিশ থাকবে। যদি আইন না থাকে তবে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দাছুরি নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে।

তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে সরকারের পদত্যাগ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কাজীর দেউড়ি নূর আহম্মেদ সড়ক থেকে পদযাত্রা শুরু করে লাভলেন মোড়, জুবলি রোড,

তিনপুলের মাথা, বোস ব্রাদার্স, ডিসি হিল, বৌদ্ধ মন্দির, লাভলেন হয়ে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে এসে শেষ হয়। নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় পদযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির

ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, ভিপি হারুনুর রশীদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

আমীর খসরু বলেন, দাছুরি ও লাঠি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে দমানো যাবে না। আওয়ামী লীগ এতিম হয়ে গেছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ও পুলিশের পিছে পিছে ঘুরছে তারা। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা ইতোমধ্যে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেনযদি বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিচের দিকে যায় তাহলে তাদের

সঙ্গে সম্পর্কও নিচের দিকে যাবে। এরপর আর কিছু বলার থাকে? ভোট চুরির নির্বাচন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, খুন, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে খসরু বলেন, নির্বাচনে যদি আবার ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ এর মত খেলা শুরু করেন তাহলে মজা বুঝবেন। কত ধানে কত চাল বাংলাদেশের মানুষ বুঝিয়ে দেবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আজ ভীত। কারণ বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং বিশ্ব বিবেক আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমে গেছে। এরা কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না। তারা সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে দেশে একটি নিরপেক্ষ সংসদ এবং সরকার আনবে। যে সরকারের জবাবদিহি থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের পতন হবে না ততক্ষণ আমরা রাস্তায় থাকব।

খসরু বলেন, রাজপথে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এটি ব্যতীত দ্বিতীয় কোনো পন্থা নাই। রাজপথে জনগণকে নিয়ে, চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে আগামী দিনে সরকারের পরাজয় ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে পদযাত্রায় জনগণের বিশাল উপস্থিতি ছিল। আজকে চট্টগ্রামেও পদযাত্রার সমাবেশ ওয়াসার মোড় ও এনায়েত বাজার মোড় পার হয়ে গেছে।

মীর মোহাম্মদ নাছির বলেন, আমরা মেগা পদযাত্রা শুরু করলাম। আরেকটা দলের ছটফটানি শুরু হয়ে গেছে। সে দল হচ্ছে চোরের দল, ডাকাতদের দল, ব্যাংক লুটেরাদের দল, মানি লন্ডারিংয়ের দল। সে দলের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। যদি আস্থা থাকত পুলিশ বাহিনীর সমর্থন নিয়ে সাধারণ মানুষকে

হয়রানি করত না। সে সমর্থন যদি উইথড্রো করে তাহলে তো তারা রাস্তায়ও নামতে পারবে না। আমরা রাস্তায় আছি এবং থাকব। এই সরকারের পদত্যাগ করিয়ে আমরা ক্ষান্ত হব। তাদের দলের নেতারা বলেন, শেখ হাসিনা আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। আসলে পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খাই।

আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, আমাদের পদযাত্রার কাউন্টার প্রোগ্রাম আওয়ামী লীগ প্রতিটি ইউনিয়নে দিয়েছে। এ কাউন্টার প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের আসল চেহারা উন্মোচিত হয়েছে।

জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, যে সরকারেরর অধীনে কবর থেকে উঠে এসে মরা মানুষ ভোট দেয় তাদের অধীনে নির্বাচন আমরা মানি না। আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করেছিলাম একবার, আর না। তারা আবার ছলছাতুরি শুরু করেছে।

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। তাকে ক্ষমতায় রেখে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আজকের এই পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। কোনো ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলনকে দমানো যাবে না। দমানোর চেষ্টা করলে এর ফল ভালো হবে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, পেশাজীবী নেতা বার কাউন্সিলের সদস্য এডভোকেট এ এস এম বদরুল আনোয়ার, আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট নাজিম উদ্দীন

চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়াসহ নেতৃবৃন্দ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন সড়কেই শেষ
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে, প্রশ্ন নাছিরের