আহমদ হোসেন খানের শিক্ষা সাধনা ও হুলাইন ছালেহ নূর কলেজ

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী | সোমবার , ৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

আহমদ হোসেন খান পটিয়ার একটি স্মরণীয় নাম। মূলত সমাজকর্মের জন্যই তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। সমাজকে আলোকিত করার জন্য, সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য শিক্ষাই প্রাথমিক শর্তএমন উপলব্ধি থেকে উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতায়ার্ধ থেকে চট্টগ্রামে মুসলমান সমাজে নবজাগরণ শুরু হয়। খান বাহাদুর আবদুল আজিজ বি.এ’র প্রণোদনায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষাব্রতী, সমাজকর্মী, বিত্তবান ও প্রজাহিতৈষী জমিদাররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজে মনোনিবেশ করেন। সীতাকুণ্ডে মাওলানা ওবায়দুল হক, দুর্গাপুরে নগ্রেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, মিরসরাইতে সাবরেজিস্ট্রার থাকাকালে খান বাহাদুর ফজলুল কাদের, পেকুয়ার গুরা মিয়া চৌধুরী, শহরে শেখচাটগাম কাজেম আলী মাস্টার, এবাদুল্লাহ পণ্ডিত ও তাঁর পুত্র কলিমউল্লাহ মাস্টার, শ্যামাচরণ সেন, ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীর ও তাঁর জামাতা জননায়ক যাত্রামোহন সেন, সারোয়াতলীতে ব্যারিস্টার পি.সি.সেন, রাউজানের আর আর এ বি সি হাইস্কুল, মোক্ষদারঞ্জন প্রতিষ্ঠিত হাই স্কুল, আর্যমৈত্রের ইনস্টিটিউশন, অনুকূল দাশ প্রতিষ্ঠিত কধুরখীল হাইস্কুল, কানুনগোপাড়া বিভূতিভূষণ দত্ত হাইস্কুল, পটিয়া হাইস্কুল, মৌলভী আবদুস সোবহান ও রাহাত আলী দারোগা প্রতিষ্ঠিত এ এস রাহাত আলী হাইস্কুল ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলো। বাদশা মিয়া চৌধুরী এসে কলেজীয় শিক্ষার দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। আহমদ হোসেন খান এমনি একজন শিক্ষাব্রতী, যিনি পশ্চিম পটিয়ায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য অসাধারণ অবদান রেখেছিলেন। তিনি চাকরি করতেন রেলওয়েতে, কিন্তু তাঁর জীবনকে নিবেদিত করেছিলেন শিক্ষাসাধনায়।

জনাব আহমদ হোসেন খান ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিম পটিয়া, পশ্চিম বোয়ালখালী ও আনোয়ারা উপজেলা তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের অধিবাসীদের শিক্ষা সমপ্রসারণকল্পে ও উচ্চ শিক্ষার সুবিধার্থে উক্ত এলাকাসমূহের কেন্দ্রস্থল আরাকান সড়কের নিকটবর্তী হুলাইন গ্রামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সে সময় বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিল্পপতি আলহাজ্ব ছালেহ আহমদ চৌধুরীর মত বিদ্যোৎসাহী ও বিত্তশালী মানুষকে তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং ঐ পরিকল্পনার সাথে তাঁর ভ্রাতা মরহুম আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ চৌধুরীকেও সম্পৃক্ত করেন। উক্ত পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের তাগিদে কলেজ পরিকল্পনা কমিটির আহবায়ক হিসেবে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি পাঁচরিয়া দীঘির পাড়স্থ হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় প্রাঙ্গণে এক জনসভার আয়োজন করেন। উক্ত সভায় প্রয়াত মন্ত্রী ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। “হুলাইন ছালেহনূর কলেজ” নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য জনাব আহমদ হোসেন খান প্রথম প্রস্তাব করেন। তিনি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে যাবতীয় কাজের দায়িত্বভার পালন করেন। তিনি দীর্ঘকাল কলেজের সম্পাদক ও আজীবন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

তিনি বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজেকে নিবেদিত রাখেন। তিনি নিজ এলাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় নিম্নোক্ত শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন পদে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। পটিয়া সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে (১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে) সাংগঠনিক ফাইন্যান্স কমিটির সদস্য ছিলেন। জে. এম. সেন মহাবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম এর ১৯৭২১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কার্যকরী সংসদের সদস্য ছিলেন। হুলাইন হযরত ইয়াছিন আউলিয়া হামিদিয়ে আবেদিয়ে সিনিয়র মাদ্রাসা পরিচালনা সংসদের বহু বছর যাবৎ সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তৎসংলগ্ন মসজিদ, মাজার ও কবরস্থান সংস্কারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫ বছরেরও অধিক সময় পরিচালনা সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি হাবিলাসদ্বীপ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫ বছরের অধিক সময় সহসভাপতি ও সদস্য হিসেবে জড়িত ছিলেন। দেশ বিভাগের পর হতে প্রায় ২৫ বছরেরও অধিক সময়ে তিনি হুলাইন আমিন শরীফ চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি, সম্পাদক ও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। হুলাইন জরিনা বেগম এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু নিরলসভাবে নিজেকে নিয়োজিত রেখে অসংখ্যা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সদালাপী, সরল, ধর্মভীরু, সৎ, শিক্ষানুরাগী এবং সমাজসেবক ছিলেন।

আহমদ হোসেন খান একজন অসাধারণ অতুলনীয় সংগঠক ছিলেন। ছাত্র জীবনেই তাঁর সাংগঠনিক প্রতিভার প্রকাশ ঘটেছিলো। শাকপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি নিখিলভারত মুসলিম ছাত্রলীগ বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সহসম্পাদক (১৯৩৯১৯৪১) ছিলেন। তখনই তিনি মানবসেবা ও সমাজকল্যাণের পাঠ গ্রহণ করেছিলেন।

আহমদ হোসেন খান ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে স্বগ্রামে ‘হুলাইন এথলেটিক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করে ২০ বছরাধিককাল উক্ত প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে থেকে গ্রামের মধ্যে খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং বন্যাজলোচ্ছ্বাসের সময় বিভিন্ন সেবামূলক কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ঐ সময়ে উক্ত ক্লাবের মাধ্যমে কায়েদআজম ও মকবুল আলী চৌধুরী স্টাইপেন্ড এবং আমিন শরীফ চৌধুরী যাকাত ফান্ড গঠন করে অত্র এলাকার বহু গরিব ও মেধাবী ছাত্রের উচ্চ শিক্ষা লাভের ব্যবস্থা করেন।

তিনি ১৯৫৫ সাল হতে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়ন ফুড এন্ড রিলিফ কমিটির কয়েকবার সম্পাদক এবং পটিয়া উপজেলার ফুড এন্ড রিলিফ কমিটির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ও বিভিন্ন অবস্থায় সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।

দু’ভাই যদি হন প্রতিষ্ঠাতা, তবে তাঁকে বলতে হয় উদ্যোক্তা। হুলাইনে কলেজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি; ছালেহনূর কলেজ তাঁরই ব্রেইন চাইল্ড। তিনি শুধু কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টা নন, সার্থক রূপকারও।

টাকাপয়সা অনেকেরই থাকে, কিন্তু সে টাকাপয়সা সৎ কাজে ব্যয় করার মানসিকতা সকলের থাকে না। শিক্ষার জন্য টাকাপয়সা খরচ করতে হলে মন থাকতে হবে। শিক্ষার প্রতি দরদ বা শিক্ষানুরাগ না থাকলে শিক্ষা প্রসারের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদানের মনোবৃত্তি জাগ্রত হতে পারে না। আহমদ হোসেন খান অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন ছালেহ আহমদ চৌধুরী ও নূর মোহাম্মদ চৌধুরী ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের আগ্রহ আছে। সেই আগ্রহটা উস্কে দেয়া দরকার। আহমদ হোসেন খান সাহেব সে কাজটিই করেছিলেন। আহমদ হোসেন খান এখন একটি বিস্মৃত নাম, যিনি না হলে কলেজ হতো না, তাঁর কথা কেউ মনে রাখেনি। আহমদ হোসেন খান একজন অবন্দিত নায়ক।

অথচ কী পরিশ্রমটাই না তিনি করেছেন কলেজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আসামবেঙ্গল রেলওয়ের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি, পরে পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়ের কর্মকর্তা। কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর তাঁর আর নাওয়াখাওয়া ছিলো না। কোথায় অফিস, কোথায় বাড়ি। অফিসে গিয়ে হাজিরা খাতায় দস্তখতটা করে কোটটা চেয়ারে ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়তেন কলেজের কাজে; কলেজের কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট মানুষজনের দুয়ারে দুয়ারে, তাদের অফিসে বাসায় বাসায় আহমদ হোসেন খানের ধর্ণা দেয়াই ছিলো তাঁর কাজ। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, ঘেমে নেয়ে একসা তবুও অক্লান্ত আহমদ হোসেন খান। গ্রামের মেঠো পথ, আল পথ, কর্দমাক্ত রাস্তা মাড়িয়ে ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকের বাড়ি, কলেজ কমিটির সদস্যদের কাছে ছুটে যাবার বিরামহীন পথচলা। নিজের ঘরবাড়ি, ছেলেমেয়েদের প্রতিও কোন দৃষ্টি ছিলো না তাঁর। দিন নেই রাত নেই, ঘুম নেই, কলেজই ছিলো তাঁর ধ্যানজ্ঞান। যতদিন কলেজ হয়নি, বিশ্রাম ছিলো না তাঁর ।

তিনি ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম শহরের পটিয়াবাসীদের প্রতিষ্ঠিত পটিয়া ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের কয়েকবার সদস্য পদে থেকে চট্টগ্রাম শহরের পটিয়াবাসীদের সুযোগ সুবিধা বিধানের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেন।

তিনি ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে পটিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ স্থাপনের সময় সাংগঠনিক কমিটিতে ফাইন্যান্স কমিটির সদস্য হিসেবে কলেজ প্রতিষ্ঠাকল্পে বিভিন্ন জায়গায় অর্থ সংগ্রহ ও ছাত্র সংগ্রহের কাজে সহযোগিতা করেন।

আহমদ হোসেন খান ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নজির আহাম্মদ খান ও মাতার নাম বলকিস খাতুন। তিনি নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা সমাপ্ত করে প্রথমে হাবিলাসদ্বীপ মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয়ে ও পরে শাকপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। পরবর্তীকালে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে হাবিলাসদ্বীপ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

তিনি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে পটিয়া উপজেলাধীন আশিয়া গ্রামের মল্ল গোষ্ঠীর আনোয়ার আলী চৌধুরীর নাতনি ও কাদের বক্স চৌধুরীর ১ম মেয়ে নুর জাহান বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর ২ ছেলে এবং ৩ মেয়ে।

তাঁর প্রথম ছেলে আফছার হোসেন খান গ্র্যাজুয়েশন শেষে সোনালী ব্যাংক এর কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার মৃত্যুবরণ করেন। তার ২য় ছেলে মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি শেষে হুলাইন ছালেহনুর কলেজে প্রায় পাঁচ বছরকাল প্রভাষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড এর সিনিয়র কর্মকর্তা। তার তিন মেয়ের মধ্যে প্রথম মেয়ে মরজিয়া বেগম পটিয়া আল্লাই ওখারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও তার স্বামী পটিয়া প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণালয়ে (পি,টি,আই) সুপারিনটেন্ড হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। দু’জনই পরলোকগত। তার দ্বিতীয় মেয়ে হাছিনা খানম মধ্যম শিকলবাহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত এবং তার স্বামী সোনালী ব্যাংক এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। তার তৃতীয় মেয়ে সাহেদা বেগম স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং তার স্বামী কৃষি ব্যাংক এর ম্যানেজার ছিলেন। আহমদ হোসেন খান তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন শেষে ৬৩ বছর বয়সে ১ এপ্রিল ১৯৮৮ শুক্রবার রাত বারটার সময় হুলাইন গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

লেখক : সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতি সংগঠক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআহমেদ আমিন চৌধুরী : অভিধান রচনা, উপভাষা ও স্থানীয় ইতিহাস চর্চার বাতিঘর
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে বিএনপির ইফতার মাহফিল