খাগড়াছড়িতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের মামলায় প্রধান আসামিসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি মো. আমিন, বেলাল হোসেন, ইকবাল হোসেন, আবদুল হালিম, শাহিন মিয়া, অন্তর ও আব্দুর রশীদকে গ্রেপ্তার করে খাগড়াছড়ি সদর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে ৬ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল রোববার বিকালে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৬ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মামলার প্রধান আসামি আমিন জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানি হবে। এ ঘটনায় গতকাল সকালে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকলেই বিভিন্ন মামলায় জামিনপ্রাপ্ত আসামি। অস্ত্র, ডাকাতি, চুরি, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে সাজা ভোগ করেছে। কারাগারে থাকাকালীন আসামিদের মধ্যে পরিচয় হয়। জেলখানা থেকে বের হয়ে তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি জানান, বুধবার রাতে মামলার প্রধান আসামি আমিনের নেতৃত্বে ৯ জন মাটিরাঙা থেকে সিএনজিতে করে ২০ কিলোমিটার দূরের খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলবাড়ি ইউনিয়ন সংলগ্ন বলপেয়ে আদমের ভিকটিমের বাড়িতে যায়। এর আগে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমের বাড়িতে রেকি করে। রাত আনুমানিক ২টার সময় তারা প্রত্যেকে উঁচু প্রাচীর লাগোয়া গাছ বেয়ে বাড়িতে ঢোকে। তারা ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে ফেলে। ঘরে ঢুকে বাবা–মাসহ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীর হাত–পা বেঁধে ফেলে। পরে ওই নারীকে আলাদা কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। ৯ জনই এতে অংশ নেয়। প্রায় ২ ঘণ্টা তারা বাড়িতে অবস্থান করে। স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে আসে। তিনি বলেন, পুলিশের অভিযানে স্থানীয় মানুষ সহযোগিতা করেছে বলে অপরাধীদের ধরা সম্ভব হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা পেশাদার অপরাধী। তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের প্রত্যেককে আইনে মুখোমুখি করা হবে।
এর আগে শনিবার আমলী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন ধর্ষণের শিকার নারীর মা। মামলার বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে ধর্ষণের প্রতিবাদে গতকাল সকালে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম এবং মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল। তারা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।