তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের গুনাহ মাফ করেন, মহান আল্লাহ আমাদের সীমাহীন দয়া করেন। তিনি দয়াবান–মেহেরবান। তাঁর এহসান ও নিয়ামত আমাদের প্রতি মুহুর্তে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ মানব জাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত করে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টির মধ্যে যে শ্রেষ্ঠত্ব করেছেন, তা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত। এ নি’আমতের শুকরিয়া হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহর পথে নিজেদের উৎসর্গ করা। আল্লাহ্র বড় এহসান হচ্ছে তিনি আমাদের অগণিত গুনাহ করার পরও ক্ষমা করেন। তিনি আমাদের শ্বাস–প্রশ্বাস দিয়েছেন, যদি এক মুহুর্ত শ্বাস–প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তবে আমাদের মৃত্যু অপরিহার্য। আল্লাহর সবচেয়ে বড় মেহেরবানি ও দয়া হচ্ছে আমরা এখনও পর্যন্ত শ্বাস–প্রশ্বাস নিতে পারছি। আল্লাহ আমাদের সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এটির অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করতে হবে। প্রতি মুহুর্তে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এ সৃষ্টি জগতের মালিক একমাত্র আল্লাহ। পুরো সৃষ্টি জগতের সবকিছু আল্লাহতা’আলার নিয়ামত ভোগ করে। এসব নিয়ামতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছে আল্লাহ তাঁর মাহবুব হাবিবে খোদা (দ.)-কে আমাদের মাঝে প্রেরণ করেছেন। আমরা আল্লাহর মাহবুবের উম্মত হতে পেরেছি। আমাদের ঈমানের মূল হচ্ছে আল্লাহর একত্ববাদে ঈমান আনা এবং এর জন্য বারবার শুকরিয়া আদায় করা। আমাদের ইবাদত একমাত্র আল্লাহর, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং এর সাথে হাবিবে খোদা রাসুলে করিম (দ.)-এর মুহাব্বতকে ঈমানের অংশ বানাতে হবে। আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে বলেন, আমি এবং ফেরেশতাগণ নবীর উপর দরুদ ও সালাম পেশ করি, হে ঈমানদারগণ তোমরাও নবীর উপর দরুদ ও সালাম পেশ করো। নবীকে ভালোবাসা, তাঁর উপর দরুদ শরীফ পড়া ঈমানের অংশ। রাসুলে পাকের মুহাব্বত আর ভালোবাসা আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার–প্রসার করেছেন আল্লাহর প্রিয় বান্দা–আউলিয়াগণ। হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) হযরত সৈয়্যদ আবদুল কাদের জিলানী (রা.)-এর সিলসিলার প্রচার করে আমাদের সকলকে একসাথে আল্লাহর দরবারে তাওবা করার, শপথ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের গুনাহ মাফ চাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) এ সিলসিলা দিয়ে আমাদের সৌভাগ্যবানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমাদের সাথে গাউসেপাক আর মদিনাওয়ালার সাথে সম্পর্ক করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের সিলসিলা দিয়েছেন, আনজুমান দিয়েছেন, জামেয়া দিয়েছেন। বিশ্বের যে দেশেই আমরা যাই, দেখি সামনে এসে সালাম দিল, বলল জামেয়ার ছাত্র। সিরিকোটি (রহ.) জামেয়া প্রতিষ্ঠা করে ইসলামের সঠিক আক্বিদা ও বিশ্বাসের আলেম তৈরি করার এক কারখানা বানিয়েছেন। হুজুর বলেন, মুঝেহ্ দেখনা হ্যায় তো মাদ্রাসাকো দেখো।। এ মাদ্রাসার খেদমত করতে পারাটা সৌভাগ্যের। জামেয়ার বিস্তৃতি এখন আর বাংলাদেশে নেই, রাসা পৃথিবীতে জামেয়ার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামী বিশ্বের শিক্ষার্থীরা একদিন জামেয়াতে আসার জন্য, পড়ার জন্য প্রতিযোগিতা করবে। জামেয়া একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হবে–ইনশাআল্লাহ।
গতকাল শুক্রবার জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা ময়দানে সফরের শেষ জুমা নামাজে উপস্থিত লাখো মুসল্লির উদ্দেশ্যে আওলাদে রাসূল, পীরে বাঙ্গাল হুজুর কেবলা, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ) সিলসিলাহ্র কার্যক্রম পরিচালনার পর তাঁর বয়ানে একথাগুলো বলেন। তাঁর ইমামতিতে আরও দুইজন আওলাদে রাসূল জুমার নামাজে শরীক হন, সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মা.জি.আ) ও সাহেবজাদা সৈয়্যদ মেহমুদ আহমদ শাহ্ (মা.জি.আ)।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দীন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস এম গিয়াস উদ্দীন (সাকের), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ কমর উদ্দীন (সবুর), প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দীন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার চেয়ারম্যান আবুল মহসিন মো. ইয়াহিয়া খান, আনজুমান সদস্য পেয়ার মোহাম্মদ, আনোয়ারুল হক, নুরুল আমিন, তৈয়বুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, আবদুল হামিদ, লোকমান হাকীম মো. ইব্রাহীম, নুর মোহাম্মদ কন্ট্রাক্টর, আবদুল হাই মাসুম, মাহবুবুল আলম, সাদেক হোসেন পাপ্পু, মোহাম্মদ হোসেন খোকন, ঢাকা আনজুমানের সভাপতি হাজী মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্, সেক্রেটারি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি আবদুল মালেক বুলবুল, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি শোয়েবুজ্জামান তুহিন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সদস্য মাহমুদ নেওয়াজ, মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রমুখ।
দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রজভীর সঞ্চালনায় জুমা পূর্ববর্তী সময়ে বক্তব্য দেন, আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান আল–কাদেরি, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আবদুল অদুদ ও চট্টগ্রাম জেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এবং আনজুমানের মুখপাত্র অ্যাড. মোছাহেব উদ্দীন বখতিয়ার। শেষে হুজুর কেবলা (মা.জি.আ) বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।