নগরীর আলমাস সিনেমা হলের জায়গায় ১০ তলা ইনডোর স্টেডিয়াম হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ইনডোর খেলাধুলার পাশাপাশি দশম তলায় আলমাস ও দিনার নামে ছোট পরিসরে দুটি সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় ১৯৬৭ সালে অবাঙালি একজন ব্যবসায়ী আলমাস সিনেমা হল নির্মাণ করেন। একসময় হলটি সিনেমাপ্রেমীদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র ছিল। প্রায় প্রতিদিন ভিড় লেগে থাকত সিনেমা হলটিতে। স্বাধীনতার পর হলটি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে আসে। ট্রাস্ট্রের কাছ থেকে লিজ নিয়ে একজন ব্যবসায়ী হলটি পরিচালনা করছিলেন। দেশে সিনেমার দুর্দিনে অন্যান্য হলের মতো আলমাস সিনেমা হলেও বিপর্যয় নেমে আসে। দীর্ঘদিনের পুরনো হলটি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবনের অবস্থাও নাজুক। নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হলটির জায়গা অনেকটা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম বীর প্রতীক আলমাস সিনেমা হলের জায়গাটিতে নগরবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনা গড়ে তোলার চিন্তা–ভাবনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আলমাস সিনেমা হলের স্থানে একটি দশ তলা ইনডোর স্টেডিয়াম গড়ে তোলার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
ইনডোর স্টেডিয়ামের প্রতিটি তলায় থাকবে ভিন্ন ভিন্ন খেলাধুলার জন্য নির্ধারিত স্পেস। এখানে ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, ভলিবল, স্নুকার, টেবিল টেনিসসহ বিভিন্ন ইনডোর গেমের জন্য আলাদা সুবিধা রাখা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের ক্রীড়া চর্চা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে এ স্টেডিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ইনডোর স্টেডিয়ামের একেবারে উপরের তলায় নির্মাণ করা হবে দুটি আধুনিক সিনেপ্লেক্স। আলমাস ও দিনার নামে ওই দুটি সিনেপ্লেক্সে সিনেমা প্রদর্শিত হবে। এর মাধ্যমে সিনেমা হলের ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সিনেমা উপভোগেরও সুযোগ মিলবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম বীর প্রতীক বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি বলেন, আমরা এটিকে চট্টগ্রামের ক্রীড়া এবং বিনোদনের একটি নতুন ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তরুণ সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে এবং সুস্থ বিনোদনের সুযোগ তৈরি করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শুরু করতে চাই। এজন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইনডোর স্টেডিয়াম ও সিনেপ্লেক্সের সমন্বিত প্রকল্পটি চট্টগ্রামের নগরজীবনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।