শোকের মাস আগস্ট এলো এবার অনেক বিভীষিকা, নৃশংসতা, সহিংসতা, উত্তেজনা নিয়ে। জুলাইয়ের শেষ পক্ষে বাংলাদেশ দেখলো এক অন্যরকম বাংলাদেশ। কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত একটা বাংলাদেশ। এক পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামী লীগ পরিচালিত সরকার অন্যপক্ষে বিরোধী শক্তির পাশাপাশি গত ১৫ বছরে বিভিন্ন কারণে ত্যক্ত বিরক্ত আম জনতার বিশাল একটা অংশ। শুরুটা হয়েছিল ছোট্ট একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দিয়ে, কোটা সংস্কার আন্দোলন। শুধু সরকারি পক্ষের অতিরিক্ত আত্মঅহমিকা ও দম্ভের কারণে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংস আন্দোলনে রূপ নিলো, সুযোগসন্ধানী বিরোধী পক্ষের অন্ধকারের শক্তি সেই সুযোগটা কাজে লাগালো খুব ভালোভাবে। ঘটে যাওয়া কিছু নৃশংসতার ঘটনাকে রং চং মাখিয়ে এককে দশ বানিয়ে গুজব, প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়ে নানাবিধ কারণে ত্যক্ত বিরক্ত আমজনতাকে উস্কে দিয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে দিলো গোটা বাংলাদেশে। ফলশ্রুতিতে অনেকগুলো তাজা প্রাণের বলি হল, রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংস হল, ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হল। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর বাংলাদেশে দেখতে হলো সরাসরি বুকে গুলি চালিয়ে ছাত্র হত্যা, দেখতে হল পুলিশ মেরে ঝুলিয়ে রাখার মতো বীভৎসতা। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ দুই শিবিরে বিভক্ত। সমাজে পরিবারে দেশে যেমন দুইভাগ তেমনি লক্ষ করলে দেখবেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও লাল কালো দুই ভাগে বিভক্ত মানুষ। এই বিভক্তিতে কার কি লাভ বা ক্ষতি হচ্ছে জানিনা, তবে আসল ক্ষতিটা হচ্ছে বাংলাদেশের। আজকের এই প্রতিযোগিতামূলক পৃথিবীতে দিনের পর দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ, রাতে দিনে কারফিউ এতে করে সারা দুনিয়া থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে পেছাচ্ছে বাংলাদেশ।
অবিলম্বে সব স্বাভাবিক না হলে কে ক্ষমতায় থাকবে বা কে নতুন করে ক্ষমতায় আসবে জানিনা, কিন্তু এটা বিলক্ষণ জানি বাংলাদেশ হারবে। তাই শোকের মাসের শুরুতে বলতে চাই, আর সহিংসতা, নৃশংসতা নয়, সরকারি পক্ষ নমনীয় হোক আরো, বিরোধী পক্ষ ও নমনীয় হোক, শান্তি ফিরুক বাংলাদেশে। কোন মায়ের বুক খালি না হোক, রাষ্ট্রীয় সম্পদের এক টুকরো ইট ও ধ্বংস না হোক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকশিত হোক বাংলাদেশ।