আর কখনো যেন স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ফিরে না আসে

চমেক হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে জামায়াতের আমীর

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে একটা পরিবর্তন হয়েছে। যারা নিহত হয়েছে তাদের শাহাদাত আল্লাহ কবুল করুন, আর যারা আহত হয়েছে তাদেরকে দ্রুত সুস্থ করে দিন। এখানে আহতদের মধ্যে যাদেরকে দেখেছি তাদের প্রত্যেকের মুখে আমরা হাসি দেখেছি, আন্দোলনের জন্য নিজেদের রক্ত দিতে পেরে তারা প্রত্যেকেই গর্বিত। আর হাসপাতালের পরিচালকসহ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ আহতদের ভালো সেবা দেয়ার জন্য। আমরা উনাদের কাছে আহতদের আমানত হিসেবে রেখে যাচ্ছি। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার পর যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে আর কখনো যেন স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা ফিরে না আসে। জুলুম নির্যাতনের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়।

তিনি গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছলে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর নেতাকর্মী ও বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনগণ উপস্থিত হয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর সাড়ে ৯টায় তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দেখতে যান। এসময় তিনি তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং পাশে কিছুক্ষণ সময় কাটান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন। তিনি ডা. শফিকুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এ সময় বহু এলাকাবাসী ও ছাত্রজনতা উপস্থিত হয়ে তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা জানান।

সকাল ১০টায় তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ ওমর ফারুকের পরিবারের সাথে সাক্ষাতের জন্য লালখানবাজারস্থ চাঁনমারি রোডের টাঙ্গির পাহাড়ের বাসায় যান। এ সময় বিপুল সংখ্যক জনতা লালখানবাজার মোড়ে তাকে অভিনন্দন জানান। এছাড়া তিনি মুরাদপুরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর ইপিজেডের (প্রিপোর্ট) বাসায় যান। তিনি শহীদ শান্তর বাবামা, নানী ও ছোটবোনের সাথে সাক্ষাত করেন এবং তাদের পারিবারিক খোঁজখবর নেন ও দোয়া কামনা করেন। বিদায় মুহূর্তে তিনি উপস্থিত ছাত্রশ্রমিক সর্বস্তরের জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

এ সময় ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা ইনসাফের বাংলাদেশ গড়বো। তিনি বলেন, আপনাদের ছেলেরা একেকজন দ্বীনদার, সৎ, মেধাবী ও চরিত্রবান ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা জীবন দেয়ানেয়ার মালিক। এখানে চিরস্থায়ী থাকার সুযোগ নেই। তারা যে কাজে শহীদ হয়েছে আমরা দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করেন।

জামায়াতের আমীর আরও বলেন, চট্টগ্রামবাসীর প্রতি আল্লাহ রহম করুন। আসমান থেকে বরকতের দরজা খুলে দিন। জুলুম থেকে বাংলাদেশকে চির জীবনের জন্য মুক্ত করুন। মেহেরবানী করে আল্লাহর দ্বীনকে এ জমিনে কায়েম করে দিন। প্রয়োজনে আল্লাহর দ্বীনের জন্য আমাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। যারা জীবন দিয়েছে তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করে নিন। আল্লাহ শহীদদের পরিবার পরিজন ও আমাদেরকে সুস্থতা দান করুন। বাংলাদেশের জমিনে জাতি ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আমরা হাতে হাত মিলিয়ে ইনসাফের বাংলাদেশ গড়বো, ইনশাআল্লাহ।

আমীরে জামায়াতের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমীন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও মহানগরী এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, এফ এম ইউনুছ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, মহানগরী অফিস সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, কোতোয়ালী থানা আমীর আমির হোছাইন, ইপিজেড থানা আমীর আবুল মোকাররম, ডা. এটিএম রেজাউল করিম, ডা. ইরফান উদ্দিন চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ নাছের, ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার নয়’
পরবর্তী নিবন্ধসাময়িক বরখাস্ত চসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী