খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে কমছে চিনির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে চিনির দাম মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) কমেছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম কমছে। বিশেষ করে চোরাই পথে প্রচুর পরিমাণে ভারতীয় চিনি প্রবেশ করছে। যার ফলে শুধুমাত্র ঈদের পর থেকে প্রতি মণ চিনির দাম কমেছে ৩০০ টাকা। অন্যদিকে পাইকারিতে দাম কমার প্রভাবে খুচরাতেও কমেছে চিনির দাম। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৭৫০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন চিনির আড়তদার জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিনির বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। চিনির ব্যবসায়ীদের কাছে মজুদও পর্যাপ্ত রয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, আমাদের দেশে গুটিকয়েক চিনি আমদানিকারক আছে। তারা নির্দিষ্ট কিছু ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে চিনি বিক্রি করেন। সরকার চাইলে ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেসবের কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় কৃত্রিম সংকট তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন। চিনির বাজার নিয়ে গত দেড় দুই বছর ধরে ছিনিমিনি খেলছেন ব্যবসায়ীরা। একেক সময় একেক অজুহাতে তারা চিনির দাম উঠানামা করান।