কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসাসহ (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) বিভিন্ন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে নাসির উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব।
গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ইলিশিয়া এলাকার দুর্গম চিংড়ি ঘেরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় দুটি এলজি বন্দুক ও দুটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার র্যাব–১৫’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) মো. আবু সালাম চৌধুরী গতকাল সোমবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটক নাসির উদ্দিন চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর–সুরাজপুর ইউনিয়নের সুরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাকে যে ঘের থেকে আটক করা হয়েছে ঘেরটির মালিক মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। র্যাবের দাবি, আটক নাসির উদ্দিন বিভিন্ন জায়গা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে আরসা ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করে আসছিল।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার একই অভিযোগে চকরিয়া থেকে অস্ত্রসহ তিনজন এবং কঙবাজার শহরের বাহারছড়া থেকে তিনটি অস্ত্রসহ রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছিল র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা গোপনে কঙবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে আসছে। তারা এই অস্ত্র দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কঙবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, হত্যা ও নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করছে। আর এ তথ্যের ভিত্তিতে চকরিয়ার ইলিশিয়ায় একটি চিংড়ি ঘেরে অভিযান চালিয়ে দুটি তাজা কার্তুজ ও দুটি এলজি বন্দুকসহ নাসির উদ্দিনকে আটক করা হয়। ওই চিংড়ি ঘেরের চারপাশে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে এবং সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার ব্যবহার করে নিরাপদে অস্ত্র ব্যবসা পরিচালিত করা হচ্ছে– যা অভিযানকালে পরিলক্ষিত হওয়া গেছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তার দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক নাসির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করেছে। তাকে চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান মো. আবু সালাম চৌধুরী।
তবে আটক নাসিরকে একজন ‘ভালো ও শান্তশিষ্ট ছেলে’ দাবি করে মাতামুহুরি সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, সে কোনোভাবে অস্ত্র ব্যবসায়ী হতে পারে না। আমার ঘেরে কোনো অস্ত্র ছিল না। ঘেরটি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পরিচালিত হত। কিন্তু ঘেরের সিসি ক্যামেরার হার্ডডিঙ নিয়ে গেছে র্যাব। হার্ডডিঙ চেক করলেই বিষয়টি ধরা পড়বে।