আমার মেয়েকে হত্যা করেছে কে

প্রশ্ন মায়ের

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

গলির মুখের আজাদ স্টোর থেকে বিস্কুট চিপস কিনে বাসার দিকেই গিয়েছিল ৭ বছরের শিশু মারজানা হক বর্ষা। কিন্তু বাসায় ফিরেনি। দিনভর খুঁজেও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। তিন দিন পর সেই গলির পাশের নালাতেই মিলে তার গলিত লাশ। অবুঝ শিশুর এমন করুণ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। মা ঝর্ণা বেগম বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। ঠিক করে কোনো কথায় তিনি বলতে পারছিলেন না। শুধু বলছিলেন, আমার মেয়েকে বস্তায় ভরল কে! কারা তাকে হত্যা করেছে? কার ক্ষতি করেছে আমার মেয়ে? গতকাল সন্ধায় জামালখানের সিকদার হোটেলের পাশের গলির শাওন ভবনে জড়ো হয়েছিলেন শিশু বর্ষার আত্মীয় স্বজনরা। ওই ভবনের নিচ তলায় থাকে তার পরিবার। স্বজনরা বর্ষার মাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

বর্ষার বড় বোন সালেহ আকতার রুবি বলেন, এতো ছোট বাচ্চার সাথেও এমন হতে পারে এটা মেনে নিতে পারছি না। ময়নাতদন্তের জন্য বর্ষার লাশ যখন পুলিশ নিয়ে যাচ্ছিল তখন সেখানে ছিল বর্ষার মামা রাজু। তিনি বলেন, বর্ষা যেদিন নিখোঁজ হয় (গত সোমবার) সেদিন পুজো থাকায় স্কুল বন্ধ ছিল। তাই সকাল থেকে মায়ের সাথেই কাটে তার সময়। বিকাল ৪ টার দিকে চিপস খাবে বলে আবদার করে এবং ২০ টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হয় সে। তারপর থেকেই নিখোঁজ। রাজু আরো বলেন, আগের দিন স্কুল খোলা ছিল। আমি নিজে তাকে স্কুলে নিয়ে গেছি এবং স্কুল শেষে বাসায় নিয়ে আসি। আমার ভাগ্নি খুবই ভালো ছিল। বাসার বাইরে বলতে শুধু গলিতেই ঘুরে বেড়াতো।

যে দোকান থেকে চিপস বিস্কুট কিনে বর্ষা সেটার অবস্থান সিকদার হোটেলের পাশে। দোকানের নাম আজাদ স্টোর। সুলতান নামের একজন ওই দোকানে নিয়মিত বসেন। বর্ষা যেদিন ওই দোকানে চিপস বিস্কুট কিনতে যায় সেদিন দোকানে ছিলেন সুলতানই। সুলতানের কাছ থেকে চিপস বিস্কুট কিনে বাসার উদ্দেশ্যে যায় শিশু বর্ষা। গতকাল লাশ উদ্ধার পরবর্তী সময়ও সুলতান দোকানে ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চারটার আগে পরে হবে এমন সময় শিশু বর্ষা আমার দোকানে আসে। এসে ১০ টাকা মূল্যের একটি বিস্কুট দিতে বললে আমি তা দিই। আমাকে ২০ টাকার একটি নোট দেয়। আমি তাকে ১০ টাকা ফেরত দিই।

পরক্ষণেই ১০ টাকা মূল্যের একটি চিপস দিতে বললে আমি তাকে একটা চীজ বল দিই। এরপর সে বাসার দিকে চলে যায়। পরবর্তীতে তাকে আর দেখেছেন কিনা জানতে চাইলে সুলতান বলেন, না। বর্ষার আরেক বোন আলেয়া আকতার বলেন, আমার বোনকে যারা হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করা হোক। গ্রেপ্তার করা হোক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪৫ লাখ টাকার হার্টের রিং নিয়ে যেভাবে উধাও রিকশাচালক
পরবর্তী নিবন্ধনিখোঁজের তিন দিন পর মিলল শিশুর বস্তাবন্দি লাশ