সরকার পতনের কর্মসূচি আসছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রোজার পর, ঈদের পর এরকম দিনক্ষণ দেখে আন্দোলন হয় না। যে কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে, সেই কর্মসূচি আসবে। এখন প্রতিদিনই আন্দোলন। আমরা তো নেমেই গেছি মাঠে, আর ফিরে যাবো না। এটাই-তো কর্মসূচি। চট্টগ্রাম থেকে অতীতেও আন্দোলনের সূচনা করেছি। এবারও চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলন গড়ে তুলব।
বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল বিকেলে নগরের নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। সঞ্চালনা করেন নগরের সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
আমীর খসরু আরো বলেন, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম খেতাব পেয়ে গৌরবান্বিত হননি, বরং বীর উত্তম পদটি গৌরবান্বিত হয়েছে। বিএনপিতে অনেক খেতাবপ্রাপ্ত লোক আছেন কিন্তু আওয়ামী লীগে খেতাবপ্রাপ্ত লোক খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি সংবিধান লক্সঘন করেছেন! তাহলে তো এখন বাংলাদেশের অনেক বড় নেতা থেকে শুরু করে মাঠের কর্মী পর্যন্ত কেউ রেহাই পাবে না। তারা সংবিধানের বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে। এসবেরও বিচার হবে।
আমীর খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। আল জাজিরা ক্ষুদ্র একটি অংশ প্রকাশ করেছে। এতেই ভয়ে কম্পন শুরু হয়েছে সরকারের। আরও আসছে, আল জাজিরার পরবর্তী প্রতিবেদনে বহু লোকের নাম জড়িত আছে। তাতে সরকারের দেশে ও দেশের বাইরে পাতিলের খবরও বের হয়ে যাবে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটিও সদুত্তর পেলাম না। তারা শুধু প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়েছে। এসব সরকার বিদায়ের লক্ষণ। সমস্ত অপকর্মের দায়ভার নিয়ে সূবর্ণ জয়ন্তীর বছরে এ সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার বলছে, আড়িপাতার যন্ত্র আনার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, তাদের সঙ্গে এ রকম কোনো চুক্তি নেই। জাতিসংঘ বলছে, তোমরা মিথ্যাচার করছো।
তিনি আরো বলেন, খুন, গুম, হত্যার নায়ক কারা? এগুলোর সঙ্গে জড়িত সরকার। প্রশাসনকে বলব, আপনারা কোনো দলের পক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন না, জনগণের পক্ষে দায়িত্ব পালন করুন। আপনারা যতই লাঠিপেটা করেন, গুম-খুন করেন, হত্যা করেন, দেশের মানুষ কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। দুর্নীতি এখন চরম শিখরে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগের কিছু মানুষ রাষ্ট্রের সব সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে। সমস্ত জাতি আজ শঙ্কিত।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নয়, আমি তাদের সরকার বলি না। কারণ সরকার গঠন করে রাজনৈতিক দল। কিন্তু এরা কারা ? কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, কিছু দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের লোক, এরাই এখন সরকারে। এরা একটা মাফিয়া রেজিম। কিন্তু চোরের দশদিন গৃহস্থের একদিন।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বীর উত্তম জিয়াউর রহমান শুধু একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না, তিনি ছিলেন রণাঙ্গনের বীর সেনানায়ক।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইভিএম একটি ডিজিটাল মেশিন। যেখানে আপনারা ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন সেটা চলে গেছে নৌকায়। আওয়ামী লীগও এমন একটা যন্ত্র যেখানে গেলে রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা হয়, মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হয়। এসময় সাবেক মন্ত্রী শাহাজান খান কোন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সে প্রশ্ন তোলেন ডা. শাহাদাত।
বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ.এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, জেলা আইনজীবি সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, মো: মিয়া ভোলা, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এসএম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দীন, এরশাদ উল্লাহ।