আবুল ফজল : মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীল চিন্তার ধারক

| শনিবার , ৪ মে, ২০২৪ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

আবুল ফজল (১৯০৩১৯৮৩)। মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীল চিন্তার ধারক। অধ্যাপক আবুল ফজল ছিলেন সমাজ ও যুগসচেতন লেখক। স্বদেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক মনোভাব ও মানবতাবোধ ছিলো তার সাহিত্যে প্রতিপাদ্য বিষয়। তিনি সমাজসচেতন বুদ্ধিজীবী হিসেবে ছিলেন নির্ভীক। জাতির বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে তিনি কাণ্ডারি হিসেবে তাঁর প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখেন। আবুল ফজল ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলবি ফজলুর রহমান এবং মা গুলশান আরা। পড়াশোনা শুরু করেন গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ম্যাট্রিক এবং ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমানকবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে বি.এ পাশ করেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হন। বি.টি পাস করার পর তিনি দেশের বিভিন্ন জেলার স্কুল ও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার কৃষ্ণনগর কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে যোগ দেন চট্টগ্রাম কলেজে। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে যোগদান করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর থেকে তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। কর্মজীবনের পাশাপাশি অধ্যাপক আবুল ফজল বাংলা সাহিত্যেও বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, আত্মকথা, ধর্ম, ভ্রমণকাহিনী ইত্যাদি বিষয়ে তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেন।

তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো : চৌচির (১৯৩৪), প্রদীপ ও পতঙ্গ (১৯৪০), মাটির পৃথিবী (১৯৪০), বিচিত্র কথা (১৯৪০), রাঙ্গা প্রভাত (১৯৫৭), রেখাচিত্র (১৯৬৬), দুর্দিনের দিনলিপি (১৯৭২) প্রভৃতি। বাংলা সাহিত্যসংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬২), প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮০), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১) এবং আবদুল হাই সাহিত্য পদকে (১৯৮২) ভূষিত হন।

১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ থেকে রক্ষা করতে হবে