আবার জনপ্রিয় হচ্ছে ঠান্ডা আলু

লামা প্রতিনিধি | শনিবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:২৫ পূর্বাহ্ণ

মিষ্টি স্বাদের ঠান্ডা আলু। খোসাটা পাতলা, সাদাটে বাদামি। শালগমাকৃতির। খোসা ছাড়িয়ে নিলে ভেতরটা মাংসল, অত্যন্ত রসালো। কাঁচা খাওয়া যায়, আবার রান্না করেও। বর্তমানে লামা ও আলীকদমসহ তিন পার্বত্য জেলার হাট-বাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে ঠাণ্ডা আলু। ক্রমশ বেড়ে চলেছে এর চাহিদা।
শীত মৌসুমে পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঠাণ্ডা আলু বেশ জনপ্রিয়। তবে বাঙালিদের মাঝেও কদর কম নেই এর। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঠান্ডা আলু এক প্রকার মূল জাতীয় সবজি। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর শর্করা, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। সমতলে ‘কেশর আলু’ নামে পরিচিত হলেও ইংরেজিতে এর নাম ‘ম্যাক্সিকান টার্নিপ’। চাকমারা বলে থাকেন ‘জুড়ো আলু’; আর মারমা ভাষায় বলা হয় ‘রোঞেউ’।
কৃষি বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পাহাড়ে জুমিয়া কৃষাণ-কৃষাণীরা জুম চাষের সময় ধানের সঙ্গে ঠান্ডা আলুর বীজ বপন করেন। ধান ওঠে গেলে ঠান্ডা আলুর গাছ বড় হতে থাকে। আলু বড় হলে গাছের গোড়ার মাটি ফেটে যায়। তখন তা সংগ্রহ করা হয়। মাঝারি ঢালু পাহাড়ি জমিতে ঠাণ্ডা আলুর ফলন ভালো হয়।
সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাজারে ঠান্ডা আলুর সরবরাহ থাকে। তবে লামা ও আলীকদমে কি পরিমাণ জমিতে ঠান্ডা আলুর চাষ হয়, তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে যেখানে জুম চাষ হয়েছে, সেখানেই ঠান্ডা আলুর বীজ রোপণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় জুম চাষীরা। সরেজমিনে লামা বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার পরিদর্শন করে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাটের দিন জুমিয়া কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ঠান্ডা আলু বিক্রি করছেন। এর মধ্যে অনেকে তাদের কাছ থেকে পাইকারি দরে ঠান্ডা আলু কিনে নেন। ক্রেতারা জানান, ৫-৬ টি আলুর এক একটি গোছা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। ছোট এবং কিছুটা লম্বাটে সাইজের হলে দাম পড়ছে আরো কম। লামা উপজেলার রুপসী পাড়া ইউনিয়নের গগন মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া। অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক জানান, ছোটবেলা থেকে ঠাণ্ডা আলু পছন্দ করেন তিনি। মৌসুম এলেই পরিবারের সদস্যদের কাছে বাড়ে এর চাহিদা। তিনি জানান, ইদানিং সমতল ভূমিতে ঠান্ডা আলুর চাষ হচ্ছে। তবে জুমে উৎপাদিত ঠাণ্ডা আলুর কদর এবং স্বাদ দুটোই অনেক বেশি। লামা বাজারের ছোট নুনারবিল এলাকায় ঠান্ডা আলু বিক্রি করেন থুইচিং মার্মা। ১৪শ টাকা মণ ধরে ঠাণ্ডা আলু কিনেছেন তিনি। বিক্রি করছেন ১৬শ টাকায়। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার ঠাণ্ডা আলু বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশীতার্তদের পাশে ‘স্পৃহা’
পরবর্তী নিবন্ধআমবাগান শেখ রাসেল পার্কে বসন্ত উৎসব কাল