আবদুল মতিন চৌধুরী (১৯২১–১৯৮১)। বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ তম উপাচার্য। তিনি একজন পদার্থবিদ। আবদুল মতিন চৌধুরী ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মে লক্ষ্মীপুর জেলার নন্দনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে নোয়াখালী জেলার অরুণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানে এম.এসসি পাস করে তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আবদুল মতিন চৌধুরী আবহাওয়া অধিদপ্তরে আবহাওয়াবিদ হিসেবে কর্মজীবন শুরুর পর ১৯৫০–এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে রিডার নিযুক্ত হন। ১৯৫৬–তে সরকারি বৃত্তি নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্য গমন করেন এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এক্স–রে ক্রিস্টালোগ্রাফি’ বিষয়ে গবেষণা করেন। দুবছর গবেষণার পর স্বাস্থ্যগত কারণে দেশে ফিরে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। লন্ডনের অসমাপ্ত গবেষণাকর্মটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাপ্ত করে তিনি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয়বারের মতো পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬২–তে তিনি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ওই বছর থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের সদস্য (১৯৬৭–১৯৭০), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান বিজ্ঞানী এবং রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞান উপদেষ্টা (১৯৭০–১৯৭১) হিসেবেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি ১৯৭১–এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানে আটক জীবনযাপন করেন। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান থেকে দেশে প্রত্যাবর্তন করে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় প্রাক্তন অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন বোসের নামে চেয়ার প্রতিষ্ঠার পর অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরীকে সম্মানসূচক ‘বোস অধ্যাপক’ পদ প্রদান করা হয়। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে ২৪শে জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।