বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর একে–৪৭ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণকারী, নগরীর লালখান বাজার এবং দক্ষিণ খুলশীসহ সন্নিহিত অঞ্চলের ত্রাস সুলাইমান বাদশাকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কুখ্যাত সন্ত্রাসী সুলাইমান বাদশা চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে গিয়ে নোয়াখালীতে আশ্রয় নেয়। গোপন খবরের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই এলাকা থেকে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। সুলাইমান বাদশা যুবলীগ কর্মী বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কোতোয়ালী থানা এলাকায় গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর একে–৪৭ রাইফেল দিয়ে গুলিবর্ষণের অভিযোগে সন্ত্রাসী সুলাইমান বাদশাকে নোয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এদিকে গত ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট এলাকায় হাতে একে–৪৭–সদৃশ অস্ত্র, মাথায় হেলমেট, পরনে কালো টি–শার্ট ও হাফপ্যান্ট পরিহিত সুলাইমান বাদশার গুলি করার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়া পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুলাইমান বাদশা নগর পুলিশের কিশোর গ্যাংয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। নগরের লালখান বাজার, জিইসি মোড়, ষোলশহর ২ নম্বর গেট পর্যন্ত পুরো এলাকায় ফুটপাতসহ বিভিন্ন দোকানে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই সুলাইমান বাদশা। তার নির্দেশে একদল কিশোর ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় তল্লাশিকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে পুলিশের এক এএসআই আহত হন বলেও র্যাব জানিয়েছে।
র্যাব জানায়, গত ৪ আগস্ট নগরের কোতোয়ালী থানার নিউমার্কেট এলাকায় যুবলীগ কর্মী সুলায়মান বাদশা ছাত্র–জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে ছাত্র–জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে ছুটোছুটি করে পালাতে থাকে। এ সময় আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন ও তার অন্য সহপাঠীরা দৌঁড়ে কোতোয়ালী থানাধীন পুরাতন রেলস্টেশনের সামনে আসেন। তখন ইমরানকে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করা হয়। এই ঘটনায় ইমরানের বাবা বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা রুজু করেন। সেখানে সুলাইমান বাদশাকে আসামি করা হয়েছে। সে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি এলাকার জনৈক আবু তাহেরের পুত্র। বর্তমানে সে নগরীর ষোলশহরস্থ আল ফালাহ গলিতে বসবাস করে।
সুলায়মান বাদশার গ্রেপ্তারের খবরে নগরীর লালখান বাজার, দক্ষিণ খুলশী, জিইসি মোড়সহ সন্নিহিত অঞ্চলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।