আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় রোহিঙ্গা সঙ্কট ভুলে যায়নি : মার্কিন রাষ্ট্রদূত

| রবিবার , ৭ মার্চ, ২০২১ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় কাজ করে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। সমপ্রতি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আসা এই কূটনীতিককের উদ্ধৃত করে গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় শরণার্থী বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর কথা ভুলে যায়নি। শরণার্থীদেরকে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সাথে ও স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমারকে উৎসাহিত করতে আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করব। খবর বিডিনিউজের।
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার জেরেমি ব্রুয়ার ও জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতোকে নিয়ে ৩ থেকে ৪ মার্চ কক্সবাজার সফর করেন মিলার। সেখানে তারা একটি দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রকল্প, খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম, একটি শিক্ষাকেন্দ্র এবং একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। এমন এক সময় তারা কক্সবাজার সফর করলেন যখন বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। তাছাড়া ২০২০ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গা কার্যক্রমের বিষয়ে দাতাদের সম্মেলনের পর এটিই তাদের প্রথম সফর। ওই সম্মেলনে আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ৬০ কোটি ডলারের ত্রাণ তহবিলের সংস্থান হয়েছিল। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সেই সময়ে কঙবাজারের রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ২৪ কোটি ডলারের বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছে, জাপান দিয়েছে ১৪ কোটি ডলার, এবং বাংলাদেশের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীসহ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যের পাশাপাশি মিয়ানমারে গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার সকলের মুক্তি এবং সাংবাদিক, আন্দোলনকর্মী ও অন্যদের প্রতি আক্রমণ বন্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বানকারী সকলের প্রতি আমরা জোর সমর্থন জানাচ্ছি। এখন সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে হবে এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার ব্রুয়ার বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের প্রতি আমাদের জোরালো সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। কোভিড-১৯ এর ফলে গত বছর এই কঙবাজারসহ সমস্ত জায়গায় অনেক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছিল। সংক্রমণের হার স্থিতিশীল থাকার পাশাপাশি টিকা কার্যক্রম চালু হওয়ার পরও মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো যাতে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যাবশ্যক সহায়তা দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে আমাদেরকে আগের যে কোন সময়ের মতই বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষগুলোর সাথে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমাদের সহায়তার গতি আরো ত্বরান্বিত করা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে সহযোগিতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে আমরা এই যৌথ মিশনে যুক্ত হয়েছি। কঙবাজারে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত জনগোষ্ঠীকে অতিসত্ত্বর ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে জাপান কাজ করে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে ১০ কিলোমিটার ম্যারাথন
পরবর্তী নিবন্ধজিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়নি সুপারিশ হয়েছে —মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী