মালয়েশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দেশটির রাজপ্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় আনোয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। মালয়েশিয়ার শনিবারের সাধারণ নির্বাচনে কোনও দল বা জোট সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত নজিরবিহীন ঝুলন্ত পার্লামেন্টে তৈরি হয়। আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন একটি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিইদ্দিন ইয়াসিনের নেতৃত্বাধীন অপর রাজনৈতিক জোটও কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি। রাজনৈতিক দলগুলো সরকার গঠনে নিজেদের মধ্যে সমঝোতায়ও ব্যর্থ হয়। খবর বিডিনিউজের।
মালয়েশিয়ার ২২২ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১১২টি আসন। আনোয়ারের দল পায় ৮২টি আসন আর মুহিউদ্দিনের পারিকাতান ন্যাশনাল পায় ৭৩টি। নির্বাচনের চার দিন পর অচলাবস্থা থেকে উত্তরণে নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছাই নিয়ে আলোচনার জন্য সুলতানদের কাউন্সিল অব রুলার্স এর বিশেষ বৈঠক ডাকেন রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ।
মালয়েশিয়ার প্রদেশ ৯টি। প্রতিটি প্রদেশের প্রাদেশিক প্রধানের পদবী হচ্ছে, সুলতান। এই সুলতানরা সবাই রাজপরিবারের সদস্য। কাউন্সিল অব রুলার্স মালয়েশিয়ার রাজা ও সুলতানদের নিয়ে গঠিত। পদাধিকারবলে রাজা আবদুল্লাহ এই পরিষদের প্রধান। মালয়েশিয়ার রাজার ভূমিকা মূলত অলঙ্কারিক হলেও সাংবিধানিক অধিকারবলে তিনি কাউকে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করলে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আনোয়ারের (৭৫) তিন দশক ধরে চলা লম্বা সফরের অবসান হল। এক সময় যাকে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকার হিসেবে ভাবা হয়েছিল সমকামিতার অভিযোগে তাকেই কারাগারে যেতে হয়, কারাগার থেকে বের হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন আনোয়ার। ১৯৯০-র দশকে মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার, পরে ২০১৮ সালে সরকারিভাবে হবু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন, কিন্তু ক্ষমতার খুব কাছাকাছি থেকেও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। এর মাঝে সমকামিতা ও দুর্নীতির জন্য প্রায় এক দশক কারাগারে ছিলেন তিনি। তবে তার বিরুদ্ধে আনা ওইসব অভিযোগ অস্বীকার করে সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।