আনোয়ারায় বিনিয়োগ ও উন্নয়নে গুচ্ছ পরিকল্পনায় নানা প্রস্তুতি চলছে। টানেল সংলগ্ন এলাকায় ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল পরিকল্পনার পাশাপাশি পারকিকেন্দ্রিক পর্যটন সম্ভাবনার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হচ্ছে। এদিকে কেইপিজেডে আইটি সেক্টরে বিনিয়োগে নতুন করে গতি সঞ্চার হয়েছে। সব মিলিয়ে কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীরের আনোয়ারাকে ঘিরে বিনিয়োগের নতুন পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সম্প্রতি আনোয়ারায় এসে টানেল সংলগ্ন ৪০০ একর জমিতে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের সম্ভাব্যতা দেখেছেন। এই এলাকাটি সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর ও টানেলের কাছে হওয়ায় বিনিয়াগকারীদের কাছেও প্রাধান্য পাচ্ছে।
এই এলাকার কাছে প্রতিষ্ঠিত কেইপিজেডে কাজ করছেন ৩০ হাজারের বেশি কর্মী। গার্মেন্টস ও জুতা শিল্পখাতের পাশাপাশি কেইপিজেড আইটি খাতে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা দেখছে। আইটি খাতে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে ১৮ তলা বিশিষ্ট ২২টি ভবন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ভবন নির্মিত হয়েছে। এখানে ইয়ংওয়ান কর্পোরেশন কেইপিজেডের মালিকানাধীন ৫০ একর জমি নিয়ে আইটি কার্যক্রম পরিচালিত করছে, যেখানে ২২ তলার একটি আইটি ভবন থাকবে। বেসরকারি এই হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীরা ১২ ধরনের সুযোগ–সুবিধা পাবেন।
কেইপিজেডের পাশে প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে মূলত অবকাঠামোগত সুবিধা ও সাশ্রয়ী লেবার ফোর্স কাজে লাগানোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগে সুদূরপ্রসারী সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। দেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার হিসেবে এ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ জোনে প্রতিষ্ঠিত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য উৎপাদনের পর তারা নিজেরাই বিদেশে পাঠাতে পারবে। বাংলাদেশের কোনো দপ্তরে তাদের দৌড়ঝাপের প্রয়োজন হবে না।
এদিকে পারকি সমুদ্র সৈকতটি দীর্ঘদিন অবহেলিত পড়ে আছে। শিল্পায়নের পাশাপাশি বিপুল জনগোষ্ঠীর বিনোদন স্পট হিসাবে পারকি সমুদ্র সৈকতকে গড়ে তুলতে কাজ করছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ, যুগ্ম সচিব) আবু সেলিম মাহমুদ–উল হাসান বলেছেন, অপার সম্ভাবনার পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটন শিল্পে বিরাট অবদান রাখবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে পারকি সৈকতের আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিষয়টি মাথায় রেখে পারকি সৈকতকে পুরোদমে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিষয়ে কেইপিজেডের উপ–মহাব্যস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, বিনিয়োগের বেশ কিছু নতুন ও ভালো প্রস্তাব এসেছে। বর্তমানে আইটি খাতে কাজ হচ্ছে বেশি। সামগ্রিক অর্থে বড় বিনিয়োগগুলো দৃশ্যমান হতে কয়েক মাস সময় লাগবে।