চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন বন্দর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নান চৌধুরীসহ ১৭ জন হতাহতের ঘটনায় ২৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো হ্যাণ্ডকাপসহ প্রধান আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এর আগে ৭ জুন বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে আনোয়ারার বন্দর ফাঁড়িধীন বৈরাগ এলাকার মেসার্স এ এইচ এন্টারপ্রাইজের সামনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষটি ঘটে।
এ ঘটনার পরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে সংঘর্ষে গুরুতর আহত আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরী
বাদী হয়ে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১০০-১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মারধর, জখম, হাড়ভাঙা ও ক্ষতিসাধনের অপরাধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন।
মামলার আসামিরা হলেন-মোজাম্মেল হক প্রকাশ মোজাম্মেল (৪০), শাহাদাৎ হোসেন (৩৫), মো. মুছা তালুকদার (৪২), জিয়া উদ্দিন (৩২), নাজিম উদ্দিন (৪৫), মো. হাশেম (৪৫), তৌহিদুল ইসলাম (৩৮), শহিদুল ইসলাম প্রকাশ শাহিন (৫৫), নবী হোসেন (২৫), মনিরুল আলম (৩০), মো. মোজাহের (৩৪), মাকসুদ উদ্দিন বাচ্চু (৩৬), এরশাদ মিন্টু (৩৫), মো. বেলাল (৪০), মো. আইয়ুব (৩৫), তারেক আজিজ (৩৫), মোজাম্মেল হক প্রকাশ মোজাম্মেল (৩০), মো. আজাদ (৩৫), মো. সুমিন (৩৬), শামসুল আলম (৪০), মো. মাসুম (৩৫), মো. হানিফ (৩৫), মাঈন উদ্দিন খান মিন্টু (৫৫), আলী আজম প্রকাশ লিটন (২৭), সাইদুর রহমান (৩২) ও মো. মুছা (৩৬)।
অপরদিকে, গতকাল রাতে আসামি ধরতে গিয়ে টানেল মুখে ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টের সামনে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে ওসিসহ পুলিশ আহতের ঘটনায় আরেকটি মামলা হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়। যদিও সংঘর্ষ এড়াতে এসব এলাকায় এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘মামলা যেহেতু হয়েছে অবশ্য আসামিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৭ জুন প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানানো নিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এতে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি এম.এ মান্নান চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো তাঁরা চিকিৎসাধীন বলে জানা যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে সেন্টারে আনন্দ মিছিল এবং সভার আয়োজন করেছিলেন।
এই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেন উপজেলা তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক ও বর্তমান আওয়ামী লীগের একটি অংশ। একই স্থানে দুটি পক্ষই মিছিল নিয়ে আসে। একটি পক্ষ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নামে এবং অন্য পক্ষটি অর্থপ্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের নামে স্লোগান দিতে থাকে। এই সময় দুটি পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।