আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু, প্রথম দিনই সরগরম শাটল-ক্যাম্পাস

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও বিভিন্ন হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর শুরু হয়েছে প্রচার প্রচারণা। গতকাল থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রচারণার যাত্রা শুরু। প্রথম দিনই পুরো ক্যাম্পাসে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ঝুপড়ি, অনুষদ, শহীদ মিনার এলাকা, রেলস্টেশন এবং শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালান। প্রার্থীরা কেউ এককভাবে, কেউবা দলবদ্ধভাবে প্রচারণায় অংশ নেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নিজেদের নামেই প্যানেল দিয়ে চাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। প্রচারণার প্রথম দিনে তারা সকাল থেকেই সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদের ঝুপড়িতে যান।

দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় রেল স্টেশন ও শাটল ট্রেনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তাদের প্রার্থীরা। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা প্রচারণা শুরু করেছি। শুরুর দিনে বিভিন্ন ঝুপড়ি ও রেল স্টেশনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সমর্থন চেয়েছি।

অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বাধীন ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ বৃহস্পতিবার শহীদ মিনার, রেল স্টেশন ও শাটল ট্রেনে প্রচারণা চালায়। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে নিজেদের প্যানেলকে পরিচয় করিয়ে দেন। জিএস প্রার্থী সাইদ বিন হাবিব বলেন, সকলে মিলে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছি। প্রচারণার শুরুর দিনে আমরা শহীদ মিনার, রেল স্টেশন ঝুপড়ি, বিভিন্ন শাটল ট্রেনে প্রচারণা চালিয়েছি। রাতে বিভিন্ন হলে প্রচারণা চালানো হবে।

বামপন্থি বিভিন্ন সংগঠন ও আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরাও শাটল ট্রেনেই প্রচারণা শুরু করেন। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, আমরা শাটল ট্রেনের মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের ব্যাপারে পজিটিভ। এ ছাড়া ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থীরাও প্রথম দিনেই ঝুপড়ি ও অনুষদগুলোতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রচারণা চালিয়েছেন।

চাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ৩ যুগ পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এভাবে জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, শ্লোগান আর ভোট চাওয়াটা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি করেছে নতুন উদ্দীপনা। প্রথম দিনের প্রচার কার্যক্রমই ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামী দিনগুলোতে পুরো ক্যাম্পাস আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।

সর্বজনীন শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ’ নামে নতুন প্যানেলের আত্মপ্রকাশ : চাকসু নির্বাচনে রাজনৈতিক অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ’ নামে আংশিক প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে দুপুর ১টার দিকে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদ মো. রেদওয়ান, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২০২৪২৫ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আরাফাত ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদে ২০২০২১ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

১৩ সদস্য বিশিষ্ট এ আংশিক প্যানেলে অন্যান্য পদে প্রার্থী হয়েছেনসাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. রবিউল হাসান, দপ্তর সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন, সহদপ্তর সম্পাদক তাসনীম ফাত্তাহ কিবরিযা, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক মুসররত কবির পৃথা, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক এএম তৌহিদুল হক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মশিউর রহমান দূর্জয় এবং নির্বাহী সদস্য পদে মো. রায়হান মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এজিএস প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি শাখা ছাত্রদলের একজন এক্টিভ কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। সংগঠনের প্যানেলের প্রার্থী হতে ভাইভা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে নেওয়া হয়নি। পরে আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন আমাদের সমমনাদের নিয়ে সর্বজনীন শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ আংশিক প্যানেল গঠন করেছি। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল ঘোষণার পর থেকে আমি দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। আমি ছাত্রদলে থাকব কিনাএটা সংগঠনই সিদ্ধান্ত নেবে। সংগঠন যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটাই মেনে নেব। সংগঠন আমাকে নির্বাচন থেকে সরে আসতে বললেও আমি নির্বাচন করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিপি ২৪ ও জিএস ২২ নিয়ে মোট প্রার্থী ৯০৮
পরবর্তী নিবন্ধতীব্র যানজটে স্থবির নগরী