বর্তমান সময় খুবই অস্থিরতার। পত্রিকা, ফেইসবুক খুললেই দেখি অহরহ ঘটছে রহস্যজনক মৃত্যু, খুন, ধর্ষণের মত ঘটনা। আজ যে মানুষটা ঘর থেকে বের হল অফিসের উদ্দেশ্যে,কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় যে বাসায় ফিরবে তার ও কোন নিশ্চয়তা নেই। জীবন যেন চরম অনিশ্চয়তায় আর নিরাপত্তাহীন। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মানুষের মনকে করে তোলে অশান্ত, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। জীবনে চলার পথে ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উত্থান পতন এবং নানা ঘাত– প্রতিঘাত, দুঃখ, বিষণ্নতা এগুলো খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এর মধ্যেও মানুষকে ভালো থাকার চেষ্টা করতে হবে। তাই অশান্ত মনকে শান্ত রেখে, যে কোন পরিস্থিতিকে জয় করার জন্য শারীরিক মানসিক সামাজিক আর আত্মিক ফিটনেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি প্রত্যাশা পূরণের পর ও যে শূন্যতা আর হাহাকার, সেটি দূর করতেই প্রয়োজন আত্মিক উন্নয়ন। আত্মিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তিই হলো আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে সমাজকেন্দ্রিক হওয়া। শুধু নিজের জন্য নয়, চারপাশের মানুষের জন্য বাঁচা। সবার কথা ভাবা। হাজার বছর আগে মহামতি বুদ্ধ বলে গেছেন -‘একটি প্রদীপ যেমন আগুন ছাড়া প্রজ্বলিত হতে পারেনা, তেমনি আত্মিক শূন্যতা দিয়ে কোন মানুষ বাঁচতে পারে না।’ আত্মিক শূন্যতা মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়। একজন যিনি, সহজে অন্যকে ক্ষমা করতে পারেন, অন্যের ব্যথায় সমব্যথী, মানবতার কল্যাণে নিজের মেধাকে সেবায় রূপান্তরিত করতে পারেন, তিনিই আত্মিকভাবে ফিট। আত্মিক ফিটনেস অর্জন করতে হলে, মানসিক ফিটনেস ও অর্জন করতে হবে। মানসিক ফিটনেসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দৃষ্টিভঙ্গি বা ভাবনা। কারণ আমরা যা ভাবি, আমরা তা –ই।ভাবনাকে যত বিশুদ্ধ ও নির্ভেজাল রাখা সম্ভব হবে মানসিক সুস্থতা ও তত বাড়বে। যে মাটিতে মানুষ আছাড় খায়, সেই মাটিতেই আবার সে উঠে দাঁড়ায় — এই উঠে দাঁড়ানোর সামর্থ্যই মানসিক ফিটনেস। এ সামর্থ্য জন্মগত নয়,নিজের ভেতরে এর উন্মেষ ঘটানো সম্ভব। তাই ব্যর্থতাকে নিয়তি হিসেবে মেনে না নিয়ে বার,বার চেষ্টা করতে হবে।মন থেকে সকল দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে।কারণ জীবন মানেই বার,বার শুরু করা।আর কোন কিছু জয় করার জন্য প্রয়োজন শারীরিক মানসিক সামাজিক ও আত্মিক জীবনের প্রতিটি দিকের সুন্দর সমন্বয়।