আত্মউৎসর্গীকৃত মহীয়সী শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী

স. ম. জাফর উল্লাহ | শুক্রবার , ২৫ জুলাই, ২০২৫ at ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ

রাজধানী উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ক্রাস করলে এতে আগুন ধরে যায়। বিদ্যালয়টির প্রাথমিক শাখাসহ থাকায় সেখানে শিশু শিক্ষার্থী সংগত কারণে বেশি ছিল। আকস্মিক ঘটনায় শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ সকলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তে পুরো বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে নিশ্চিত মৃত্যু মুখে পতিত হয়। যে যেভাবে পারে জীবন বাঁচাতে চেষ্টা করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী অন্যদের মত নিজের জীবন বাঁচাতে বিন্দু পরিমাণ চেষ্টা না করে শিশু শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে জলন্ত আগুনের ভিতর আটকে পড়াদের বের করে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা করে এবং তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ২০ জন শিশুকে প্রাণে বাঁচাতে সক্ষম হন কিন্তু অতক্ষণে তিনি নিজে আগুনে আটকা পড়ে প্রাণ হারান।

তিনি ইচ্ছা করলে নিজের জীবন নিয়ে পালাতে পারতেন। কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে অপরাধবোধ তাঁকে অন্যের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবনের মায়ায় আটকাতে পারেনি। নারী শুধু নিজ সন্তানের জন্য মা নয় অন্যের সন্তানকেও মায়ের মমতায় আগলে রাখতে জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করলেন। শিক্ষক শুধু প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে তা সত্যিকার একজন শিক্ষকের ব্রত নয় বর্তমান কিছু শিক্ষকের অনৈতিক অপরাধ অপকর্মের কারণে পুরো শিক্ষক সমাজের প্রতি যে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে মাহরিনের আত্মত্যাগ সে ধারনার ভুল ভেঙে দিয়েছে। মানুষ মানুষের জন্য যে বাক্যটি শুধু বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ তা বাস্তবায়নে মাহরিনের জীবন উৎসর্গ শিক্ষার জন্য অতুলনীয়। মাহরিন নারী জাতির গর্ব গৌরব অহংকার মায়ের হৃদয় প্রত্যেক শিশুর জন্যে অভিন্ন মাহরিনই সে কথা বাস্তবায়ন করেছে। মাহরিনের জীবন উৎসর্গ জাতি শ্রদ্ধাভরে সম্মান করে তাঁর নিঃস্বার্থ ত্যাগ জাতির জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুল নয়, দিয়ে আসলাম যমের ঘরে
পরবর্তী নিবন্ধমাইলস্টোন ট্র্যাজেডি