এশিয়া কাপে ভারত–বাংলাদেশের লড়াই মানেই আলাদা উত্তেজনা। অন্তত গত কয়েকটি আসরে এমনটিই দেখা যাচ্ছে। ঠিক তেমনই আরেকটি উত্তেজনা ছড়ানো লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হবে ভারত ও বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের এবারের আসরের সুপার ফোর পর্বের চতুর্থ ম্যাচে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আবারও মাঠে নামছে দু’দল। আজ বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সুপার ফোরের এই লড়াইয়ে ভারত চাইবে টানা জয়ের ধারা ধরে রাখতে। কারণ টুর্নামেন্টে তারা এখনো একমাত্র অজেয় দল। অপরদিকে বাংলাদেশ চাইবে নিজেদের সেরাটা দিয়ে চমক দেখাতে।
ভারত এবং বাংলাদেশ দু’দলই সুপার ফোর পর্ব শুরু করেছে জয় দিয়ে। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের জোয়ারে ভাসছে ভারত। কাজেই আজও সে ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবে ভারত– সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। পাকিস্তানকে টানা দুইবার উড়িয়ে দেওয়ার পেছনে অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিলের ব্যাটে ছিল বড় ভূমিকা। সাথে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুরিয়া কুমার যাদব। এই তিন ব্যাটার আজও ভারতের ব্যাটিং শক্তির মূল ভরসা। বিশেষ করে স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে।
অপরদিকে বাংলাদেশও তাদের সুপার ফোর পর্ব শুরু করেছে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে। গ্রুপ পর্বে লঙ্কানদের কাছে হারলেও সুপার ফোর পর্বে তার মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের মূল পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে স্পিন আক্রমণকে ঘিরে। তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন এই এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন। তার সঙ্গে থাকবেন অভিজ্ঞ অফ স্পিনার মেহেদী হাসান। মিডল ওভারে এই দুজন যদি ভারতীয় ব্যাটারদের চাপে রাখতে পারে– তাহলে টাইগারদের জয়ের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমানও দলের অন্যতম ভরসা। তার কাটার ও ডেথ ওভারের বোলিং ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। আগের ম্যাচ গুলোতে মোস্তাফিজ অন্তত সেটা প্রমাণ করেছে। এরই মধ্যে সাতটি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
যদিও টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারত ও বাংলাদেশের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাস একেবারেই ভারতের পক্ষে। ১৭ ম্যাচের মধ্যে ভারত জয় পেয়েছে ১৬টিতে। বাংলাদেশ জিততে পেরেছে মাত্র একবার। এই পরিসংখ্যান দেখলে ভারতকেই নিঃসন্দেহে ফেভারিট বলা যায়। তবে ক্রিকেটের অনিশ্চয়তা সবসময়ই ম্যাচে নতুন মাত্রা যোগ করে। বাংলাদেশও এর আগে একাধিকবার বড় দলের বিপক্ষে চমক দেখিয়েছে। বাংলাদেশ যদি টসে জিতে আগে বোলিং নিতে পারে তাহলে ভারতের রান ১৫০–১৬০ রানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবে। আর সেটা পারলে সেটিই হবে টাইগারদের সবচেয়ে বড় সুযোগ।
ভারত চাইবে টপ অর্ডারের আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে শুরুতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নিতে। পাকিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে তারা প্রথম ওভার থেকেই আধিপত্য দেখিয়েছিল বাংলাদেশকেও তেমন পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইবে তারা। তবে বাংলাদেশ প্রস্তুত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়।
শক্তি, সামর্থ্য, পরিসংখ্যান সব মিলিয়ে আজকের ম্যাচে ফেবারিট হিসেবে ভারত এগিয়ে থাকবে। তবে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। স্পিন আক্রমণ যদি জ্বলে ওঠে আর ব্যাটাররা দায়িত্বশীলভাবে খেলতে পারেন তবে টাইগাররা চমক উপহার দিতে পারে। অপরদিকে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ যদি আবারও ঝলক দেখায় তবে তাদের জয়রথ থামানো কঠিন হয়ে যাবে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করছে বাংলাদেশ। বিনা যুদ্ধে ময়দান ছাড়ছে না। আজকেও যেমনটি ছাড়ার পক্ষপাতী নয় বাংলাদেশ দল।










