আগে ভাগে জাকাত দিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ান

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | বৃহস্পতিবার , ১৩ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানে প্রতিটি পুণ্যময় কাজের প্রতিদান মিলে ৭০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত। রোজার মাসেই জাকাত দিতে হবে এমন ধরাবাঁধা নিয়ম না থাকলেও বিত্তবান লোকেরা অধিক পুণ্য অর্জনের আশায় জাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে রমজান মাসকে বেছে নেয়। এটি অবশ্যই পছন্দনীয় আমল। ধনীরা এ মাসে জাকাত দেন সত্য, কিন্তু এতো দেরিতে দেন যে, তখন গরিব লোকগুলো হতাশ হয়ে পড়েন। জাকাত যখন দিতেই হবে, রোজার শুরুর দিকে দিলে গরিব লোকগুলো পুরো মাসটি হাসিখুশিতে কাটাতে পারেন। রোজার শুরুর দিকে জাকাত না পাওয়ায় গরিব মানুষেরা একটু স্বাচ্ছন্দে জীবন অতিবাহিত করতে পারেন না। জাকাত কোনো দানঅনুদান বা গরিবের প্রতি অনুগ্রহ নয়, জাকাত পাওয়া গরিবের অধিকার। জাকাত একটি অর্থনৈতিক ফরজ ইবাদত বিত্তবানদের জন্য। কেউ নামাজ পড়লো, অথচ জাকাত প্রদানে গড়িমসি করলো, তখন তার নামাজই আল্লাহপাকের দরবারে কবুল হবে না। কোরআন মজিদে অনেক স্থানে বলা হয়েছে ‘আকিমুস সালাত ওয়াতুজ্জাকাত’তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত প্রদান করো। কোরআন মজিদের সুরা আজ্জারিয়াতের ১৯ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, ‘ওয়াফি আমওয়ালিহিম হক্কুল লিস্‌ সায়িলি ওয়াল মাহরুম’অর্থাৎ ‘এবং তাদের সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের অধিকার।’ অর্থনৈতিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যই জাকাতের বিধান দিয়েছেন মহান আল্লাহপাক। জাকাতের মাধ্যমে ধনীদের ধন সম্পদে দরিদ্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ধন সম্পদ কেবল ধনীদের ঘিরে কেন্দ্রিকরণ যেন না হয়, বিত্তহীন দরিদ্ররা যাতে সচ্ছলভাবে হাসিখুশিতে দিন যাপন করতে পারে এ জন্যই মহান আল্লাহপাক জাকাতের ফরজ বিধান দিয়েছেন। জাকাত হচ্ছে বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক বিধান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। ৪০ ভাগের এক ভাগ তথা প্রতি লাখে আড়াই হাজার টাকা করে হিসেব করে জাকাত দিতে হবে। সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ এবং সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর কোনো একটির সমমূল্যের নগদ টাকা এক বছর কারো কাছে জমা থাকলে জাকাত দিতে হবে। চান্দ্রবর্ষ ৩৫৪৩৫৫ দিনকে জাকাতের বছর হিসেবে ধরা যায়। কেউ অধিক পরিমাণে ঋণগ্রস্ত হলে জাকাতের টাকায় তাকে ঋণমুক্ত করে দেয়া উত্তম। বিক্ষিপ্তভাবে ১০০/২০০ টাকা জাকাত দেয়া যাবে না। এতে দরিদ্ররা খুব একটা উপকৃত হয় না। সঠিক পন্থায় পরিকল্পিতভাবে একেকজনকে মোটা অংকের জাকাত দিয়ে গরিব মানুষের ভাগ্য বদলে দিতে হবে। জাকাতের টাকায় গরিবদের স্বাবলম্বী ও পুনর্বাসন করার পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র হজ পালনে আগ্রহীদের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ১৫ বছর
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে হাজারো ডায়ালাইসিসের রোগী, ব্যয়বহুল চিকিৎসা