আগেভাগে জমে উঠেছে সরকার হাট পশু বাজার

এম নুরুল ইসলাম, আনোয়ারা | শুক্রবার , ২৩ মে, ২০২৫ at ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র কুরবানের জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উঠার আগেই জমে উঠেছে সরকার হাট। দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ এই পশুর হাট এখন পাইকার ও আগাম ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর। ক্রেতাবিক্রেতা উভয়ই বলছেন দাম এখনো সহনীয়। মণ প্রতি বড় গরু ৩০/৩১ হাজার ও ছোট গরু ৩২/৩৩ হাজার দরে কেনা যাচ্ছে।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী, ছোট বড় নানান সাইজের গরু, মহিষ ও ছাগলের বড় হাট হিসেবে সরকার হাট গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বড় পশুর হাটের মধ্যে অন্যতম। সারা দেশে এ হাটের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। ফলে সারা বছর এ হাটে রেকর্ড পরিমাণ গবাদি পশু বিক্রি হয়। যার কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭ কোটি টাকা বেশি এই হাট ইজারায় উঠে। এ হাটে দুইশ’র বেশি গবাদি পশু বিক্রেতা রয়েছেন। তাছাড়া সরকার হাটকে ঘিরে আনোয়ারা ও আশপাশ এলাকায় একশ’র বেশি খামার গড়ে উঠেছে। খামারগুলিতে দেশি, বিদেশি গবাদি পশুর উৎপাদন হয়। উৎপাদিত গরুমহিষ কুরবানের ঈদে চট্টগ্রামের মানুষের চাহিদা মেটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

বর্তমানে এ হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সাপ্তাহিক বাজার ছাড়াও প্রতিদিন গবাদি পশু বেচাকেনা হবে বলে জানা গেছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কম খরচে পরিবহন সুবিধার কারণে এ হাটের বাড়তি কদর পুরো চট্টগ্রামে।

সরেজমিনে সরকার হাটে গিয়ে ক্রেতা, বিক্রেতা ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত কুরবানের ৪/৫ দিন আগে থেকে স্থানীয় বাজারগুলিতে কুরবানের গবাদি পশু বেচাকেনার ধুম পড়ে। কিন্তু সরকার হাটে সারা বছরই রেকর্ড পরিমাণ গবাদি পশু বিক্রি হলে গত সোমবার থেকে এ হাটে আগাম কুরবানির বেচাকেনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেতা বিক্রেতারা।

এ হাটের গরু ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কুরবান উপলক্ষে নানান সাইজের গরু বাজারে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে সপ্তাহিক বাজারের দিন শুক্র ও সোমবার ছাড়া প্রতিদিন গবাদি পশু বিক্রি করবো ইনশাল্লাহ। উপজেলার অন্যান্য বাজারে বিকালে বেচাকেনা শুরু হলেও সরকার হাটে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কুরবানির পশু বেচাকেনা হয়ে থাকে। স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ জানান, এ হাটে বড় ও মাঝারি গরু প্রতি মন ৩০/৩১ হাজারের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ছোট গরু ৩২/৩৩ হাজার টাকা মনে বিক্রি হচ্ছে যা অন্যান্য বাজারের তুলনায় কম।

বাজারের ইজারাদার ক্যাপটেন নুর মোহাম্মদ জানান, প্রায় ৭ কোটি টাকায় ইজারায় নেওয়া এ হাটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি বিশেষ করে ক্রেতা বিক্রেতাদের জন্য বাজারে রয়েছে ব্যাংকিং সুবিধা, পেন্ডেল, লাইটিং ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। যানজট নিরসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন ও আনোয়ারা থানা পুলিশ। তাছাড়া সার্বক্ষণিকভাবে রয়েছে আনচার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক কর্মী। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা বাজারে গাড়িতে গরু মহিষ উঠানোর সময় হয়রানি মূলক টাকা নেওয়া বন্ধ করেছি। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই তুলনামূলক কম হাসিলে এ হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাইকোর্টের বিচারপতি দিলীরুজ্জামানকে অপসারণ
পরবর্তী নিবন্ধএনবিআর বিলুপ্তি নয়,সংশোধন হবে অধ্যাদেশ