আগুনে পুড়লো সবুজ পাহাড়

মীরসরাইয়ে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ২৪ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

আগুনে পুড়ছে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলাজুড়ে অবস্থিত সবুজ পাহাড়। দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে হাজার হাজার একর পাহাড় পুড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে এখানকার জীববৈচিত্র্য। পুড়ে গেছে অনেকের লাখ লাখ টাকার ফলদ ও বনজ বাগান। এতে করে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন সামাজিক বনায়নে পুঁজি বিনিয়োগকারীরা। আগুনের শিখায় পুড়ছে বনের পশু, পাখি ও সবুজ গাছ-গাছালি। নষ্ট হচ্ছে মাটির টপ সয়েল। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ বছরের পর বছর বনবিভাগের প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাব, দায়িত্বহীন অবহেলা ও উদাসীনতাই এই জন্য দায়ী। চৈত্র-বৈশাখ মাস আসলেই প্রচণ্ড খরতাপে গাছের পাতা শুকিয়ে নিচে ঝড়ে পরে স্তুুপ হয়ে যায়। অনেকে নিজের করে দখল করতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে মাইলের পর মাইল পাহাড়। এছাড়া এক শ্রেণির লোক ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় বনের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বনের মধ্যে ফেলে দেয়া সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
জানা গেছে, গত এক মাস ধরে উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়ন, করেরহাট-রামগড় সড়কের দুই পাশে অবস্থিত পাহাড়, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মীরসরাই সদর, খৈয়াছড়া ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিস্তিন্ন পাহাড় পুড়ে যাচ্ছে। দিনের বেলায় আগুন খুব বেশি চোখে দেখা না গেলেও রাতের বেলায় আগুনের পাহাড় পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন আশপাশের বাসিন্দারা। যার ফলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করছে পরিবেশবিদরা। উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা রনি ভৌমিক বলেন, প্রতি বছর এসময়ে আগুনে পুড়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর সবুজ পাহাড়। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর বেশি পুড়ছে বলে জানান তিনি। এভাবে চলতে থাকলে সবুজ পাহাড় ন্যাড়া হয়ে জীববৈচিত্র হুমকির পাশাপাশি পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলে মন্থব্য করেন তিনি। মীরসরাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমরান উদ্দিন জানান, ফলজ বাগান পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে কেউ তাকে অবহিত করেনি। তবে তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে অনেকে পাহাড় পরিষ্কার করার জন্য আগাছা কেটে আগুন লাগিয়ে দেয়। ওই ধরণের আগুনে হয়তো তাদের বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তাই এ বিষয়ে কেউ তাকে জানায়নি। এ বিষয়ে মীরসরাই রেঞ্জ এর বন কর্মকর্তা আবু তাহের আজাদীকে বলেন, আমরা প্রতি বছরই এই মৌসুমে চেষ্টা করি পাহাড়ি এলাকায় আগুন নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের। কিন্তু এরপরও কিছু দুস্কৃতিকারী আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেয়াশলাই বা গ্যাসলাইটার নিয়ে যায়। সিগারেটের আগুন থেকেই বেশী আগুন লেগেছে বলে আমরা জেনেছি। আগামীতে এই বিষয়ে আমরা কঠোর উদ্যোগ নিব বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবকারীদের বিচার চেয়ে হেফাজত নেতার পদত্যাগ
পরবর্তী নিবন্ধভূমধ্যসাগরে ১৩০ শরণার্থী নিয়ে নৌকা ডুবি