আগারওয়ালা ৩ দিনের রিমান্ডে, বাজুসের দোলন ও আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা

| বৃহস্পতিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান দোলন ও সাধারণ সম্পাদক ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে আসামি করে মানহানি মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতে মামলার আবেদন করেন বাজুস এর উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ঢাকার বাড্ডায় হৃদয় আহমেদ নামে এক কিশোরকে হত্যার মামলায় আগারওয়ালাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান তার তিন দিন রিমান্ডের আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।

বাজুস এর উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের অভিযোগ, ২৮ আগস্ট বেলা ১১টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টার মধ্যে বাইতুল মোকারমের দ্বিতীয় তলায় সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক খান দোলন এবং দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক এবং মানহানিকর বক্তব্য দেন। সেখানে তারা অভিযোগ করেন, বাজুসের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর এবং উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল স্বর্ণের দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। বাজুসের নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে বর্ণনা করে তারা অভিযোগ করেন, আনভীর অবৈধভাবে বাজুসের সভাপতির পদ দখল করেছেন। রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বাজুস সদস্যদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগও আনেন দোলন ও আগরওয়ালা।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মুনিয়া হত্যা ও ধর্ষণ, ভূমি দস্যুতা, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, ঋণখেলাপি এবং ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের সঙ্গে আনভীরের সম্পৃক্ততার বিষয় তুলে ধরে সাংবাদিকদের কাছে বিবৃতি দেন দোলন ও আগরওয়ালা। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সাংবাদিকতা পেশাকে আনভীরের ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ কলুষিত করছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রত্যক্ষ মদদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্রজনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় অনেকেই হতাহত হয়েছেন বলে ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়। দোলন ও আগরওয়ালার এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রুহুল আমিন রাসেল অভিযোগ করেছেন, এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্যের কারণে তার এবং বাজুসের সুনাম ক্ষুণ্ন ও ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে। আসামিরা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে তার এবং বাজুসের সভাপতির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ আনেন রুহুল আমিন।

এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর কারণে মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বাদী দাবি করেছেন, এতে তার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মো. রিপনুল হাসান ও হায়দার আলীসহ আরও কয়েকজনকে। মানহানির পাল্টাপাল্টি মামলার মধ্যেই আগরওয়ালাকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বাড্ডা থানা এলাকায় হৃদয় আহমেদ নামে তরুণকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অনেকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য আগরওয়ালাকেও আসামি করা হয়েছে। প্রসিকিউশনের আদালত পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান রিমান্ড আবেদন পাঠ করে বলেন, আগারওয়ালা এ মামলার ২০ নম্বর আসামি। প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা জানা গেছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তারে তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

বাদীর নিয়োগ করা আইনজীবী মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম তুষার বলেন, এটি লোকমুখে শুনে করা কোনো মামলা নয়। বাদী শাহাদাত হোসেন নিজেও এক ভুক্তভোগী। সেদিন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে গুলি শুরু হলে শাহাদাত নিরাপদ আশ্রয়ে যান। কিন্তু নিহত হৃদয় নিরাপদ স্থানে যেতে পারেনি। সে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। ভয়াবহ এক দৃশ্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ষোলশহরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় রাতের আঁধারে গুলি, দুই যুবক আহত