আগস্ট মাস এলেই নানামুখী ষড়যন্ত্রে সরব হয় বিএনপি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর উদ্বোধনে তথ্যমন্ত্রী

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২ আগস্ট, ২০২২ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ করেছিল সেই দুই শক্তি একীভূত হয়ে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। আর সেই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এবং বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারে প্রকাশ্য দিবালোকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্র্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে পাঁচশ’ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে। আগস্ট মাস এলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে। এবারও তারা সারা দেশব্যাপী নানামুখী ষড়যন্ত্র-নাশকতা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশকে উত্তপ্ত করার সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ভোলায় তারা গন্ডগোল করেছে।

গতকাল সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম নতুন রেলস্টেশনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুকুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলেরপ প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমানকেই সেনাবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেছিল খোন্দকার মোস্তাক আহমেদ। এতে কী প্রমাণিত হয়? এতে প্রমাণিত হয় জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড শুধুমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড নয়, সেদিন প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। সেই আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় শক্তি এই হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিল, মদদ দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকে শোকের মাস আগস্ট শুরু হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ১৫ আগস্ট শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি, আমাদের স্বাধীনতাকে হত্যা করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর পাকিন্তানের সাথে কনফেডারেশন করার অপচেষ্টা হয়েছিল। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকা পরিবর্তন করার অপচেষ্টা হয়েছিল।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যখন বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের খবর জিয়াউর রহমানের কাছে পৌঁছে তখন মাত্র ফজরের আজান হয়েছে। তিনি তখন সুটেট-বুটেট অবস্থায় ছিলেন। তিনি ছিলেন তখন সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান। ফজরের আজানের সময় সেনাবাহিনীর কেউ সুটেট-বুটেট থাকে? সুটেট-বুটেট অবস্থায় তিনি তখন শেভ করছিলেন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের কাছে যখন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খবর দেয়া হল, রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করা হয়েছে তখন তার জবাব ছিল ‘সো হোয়াট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার’। আর তিনি কাপড় চোপড় পরে তৈরি হয়ে বসেছিলেন বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে। ইতিহাসকে যদি সঠিকভাবে তথ্য দিতে হয়, পাঁচশ বছর পরের প্রজন্ম যাতে ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে পারে সেজন্য একটি কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কুশীলব ছিল তাদের মুখোশ উম্মোচন হওয়া প্রয়োজন। ইনশাল্লাহ সেটি হবে। এটি যদি আমরা না করি আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরের প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানবে না।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রসিডিংটা রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ যাদুঘরে রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা জিয়াউর রহমান কোন অবস্থায় ছিল, খোন্দকার মোস্তাক কী অবস্থায় ছিল এগুলো বিস্তারিত বলেছেন।

ভোলায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছে, পুলিশ দিয়ে সরকার আন্দোলন ঠেকানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে তিনি কীভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। আগস্ট মাসকে সামনে রেখে বিএনপি সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এটি আমরা জানি। তবে বিএনপিকে সেই সুযোগ দেয়া হবে না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, উনারা তো এখন একা মিটিং মিছিল করছে, আমরা তো এখনো শুরু করি নাই। মোকাবেলা করার মানসিকতা নিয়ে আমরা মাঠে নামলে তাহলে বিএনপি কোথায় পালায় সেটি হচ্ছে প্রশ্ন।

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন প্রান্তে গেলে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে। আমি কিছু পরামর্শ তাদেরকে দিয়েছি, ইতিহাস জানানোর স্বার্থে সেখানে আরও কিছু বিষয় সন্নিবেশিত করার কথা তাদের বলেছি। তারা সেটি করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সব মিলিয়ে এই উদ্যোগটি অত্যন্ত চমৎকার। এজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ আজ
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপিকে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী