ইফতার পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার আকুতি করেছিলেন কক্সবাজারের যুবক মোরশেদ। কিন্তু সেই আকুতিতে মন গলেনি ঘাতকদের। ঘাতকরা ইফতারের আগেই মোরশেদকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনকে গতকাল শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে গ্রেপ্তারের পর র্যাব-৭, চট্টগ্রামের কর্মকর্তাগণ এ তথ্য জানান। পাঁচজনকেই টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধের জের ধরেই মোরশেদকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল। পিটিয়ে ও কুপিয়ে মোরশেদকে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলো মাহমুদুল হক, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, আবদুল আজিজ ও নুরুল হক।
আসামিদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, হত্যার আগে মারধর সহ্য করতে না পেরে আকুতি জানিয়ে মোরশেদ বলেন, ‘এখন বেশি ক্লান্ত লাগছে, একটু পর ইফতার করবো। ইফতার শেষ করলেই তোমরা আমায় মেরো’। তবে আসামিরা তাকে সে সুযোগ দেয়নি। আসামিরা ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় র্যাব। চান্দগাঁও ক্যাম্পে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি তুলে টাকার বিনিময়ে কৃষকদের পানি দিত গ্রেপ্তারকৃত আসামি মাহমুদুল হকের পরিবার। তাদের বিরুদ্ধে কৃষকদের নানা অভিযোগ রয়েছে। তিন মাস আগে সৌদি আরব থেকে এলাকায় আসেন মোরশেদ। তিনি কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করতেন। এলাকায় প্রতিবাদী যুবক হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, মোরশেদ সেচ প্রকল্পটি তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ কারণে মাহমুদুলের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
ঘটনার দিন দুপুরে একটি সিমেন্টের দোকানে বসে মাহমুদুল মোরশেদকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং বিকেলে মোরশেদ বাসা থেকে বের হয়ে বাজারে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী মাহফুজুলরা তাকে কিরিচ ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) কক্সবাজারের পিএমখালীর বাসিন্দা মোরশেদ ইফতার কেনার জন্য স্থানীয় চেরাংঘর স্টেশনে বের হলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় তাকে। লোকজন এগিয়ে আসতে চাইলে তারা ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে মোরশেদকে হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত আটটার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মোরশেদের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন।












