সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নগরীর অক্সিজেন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল নবী ওরফে লেদুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এতে তার বিরুদ্ধে ২৬ লাখ ১৪ হাজার ১২৬ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ২৯১ টাকা মূল্যের সম্পদ অসাধুভাবে অর্জন করে ভোগ দখলে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে। আবদুল নবী বায়েজিদ বোস্তামী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। পড়াশোনা করেছেন ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের অধীনে আমিন জুট মিলস লিমিটেডের কার্পেট বিভাগে শ্রমিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–২ এর সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বাদী হয়ে আবদুল নবীর বিরুদ্ধে একই কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের ৫ জুলাই আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল নবী ওরফে লেদু সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। যাচাই করলে দেখা যায়, তিনি ৬০ লাখ ৬৪ হাজার ১২৬ টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক। এক্ষেত্রে তিনি ২৬ লাখ ১৪ হাজার ১২৬ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। সম্পদ বিবরণীতে আবদুল নবী আরো ঘোষণা দেন, তিনি ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৬ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের মালিক। যাচাই করলে তার নামে ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ টাকার মূল্যের অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।
এজাহারে বলা হয়, আবদুল নবীর নামে দায় বাদে ১ কোটি ৮৮ হাজার ২১২ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। একই সময়ে তিনি ৪৮ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ টাকার ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ ও পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় করেছেন। ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৯ টাকা। যাচাই করলে দেখা যায়, এর মধ্যে তার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া গেছে ৭২ লাখ ২৮ হাজার ৪৯৮ টাকা। বাকি ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ২৯১ টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ। অসাধু উপায়ে তিনি এসব সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন।
দুদকের করা মামলার এজাহারে বাদী আরো উল্লেখ করেন, সম্পদ বিবরণীতে আবদুল নবী বায়েজিদ থানাধীন এলাকায় ৪ শতাংশ জমিতে দ্বিতল ভবন নির্মাণ বাবদ ব্যয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ টাকা। যাচাই করলে দেখা যায়, ভবনটি নির্মাণে প্রকৃতপক্ষে ব্যয় হয়েছে ৩৮ লাখ ১৩৪ হাজার ১২৬ টাকা।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–২ এর উপপরিচালক মো. আতিকুল আলম আজাদীকে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা এখন মামলাটি তদন্ত করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।