আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন মুক্তমত প্রকাশে কোনো দল বা ব্যক্তির স্বাধীনতায় বাধা সৃষ্টি করবে না বলে আশা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। সোমবার রাত ১২টার পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জারি করা প্রজ্ঞাপনটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে জারি করা হয়েছে। বিবৃতিতে এ প্রজ্ঞাপন জারির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ের কথা বলা হয়। এতে বলা হয়, ‘তবে উক্ত প্রজ্ঞাপন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না। আওয়ামী লীগ, এর কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।’ খবর বিডিনিউজের।
বিবৃতিতে প্রজ্ঞাপনের কিছু অংশ তুলে ধরে বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে গণমাধ্যম, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোনো মাধ্যমে প্রচারণা, মিছিল, সভা–সমাবেশ ও সম্মেলন আয়োজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ১৫ বছরে বিশেষ করে গত বছরের (২০২৪) ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানকালে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে হামলা, গুম, খুন, অমানবিক নির্যাতন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘সুস্পষ্ট অভিযোগ’ রয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে বহু মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে’ গত ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র–জনতার ওপর হামলা, উসকানি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।’ দলটির এমন কর্মকাণ্ডের কারণে মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হওয়ার কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এতে বিশেষ করে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও এভাবে বিচার এবং দেশের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’ এমন প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।