বিমানবন্দর সড়কের ভোগান্তি ও যানজট কমাতে অনানুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে আউটার রিং রোড। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বহুল প্রত্যাশার ওয়ানওয়ে সড়কটির চার লেনের একপাশে চলাচল করছে উভয়মুখী গাড়ি। কিন্তু প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শত শত গাড়ি চলাচল করলেও ট্রাফিক পুলিশের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে অনেকে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এই ঝুঁকি এড়াতে রাস্তাটিকে দ্রুত ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমের আওতায় আনা জরুরি বলেও মন্তব্য করেছেন সড়ক ব্যবহারকারীরা।
শহরের জিইসি থেকে মাত্র ৪০ মিনিটে পতেঙ্গা বিমানবন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে চট্টগ্রাম আউটার রিং রোডের কারণে। জিইসি মোড় থেকে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট বাইপাস ধরে টোল রোড হয়ে আউটার রিং রোডে পৌঁছেই অনায়াসে একশ’ বিশ কিলোমিটার স্পিডে চালানো যাচ্ছে গাড়ি। ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার এই প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের সন্নিকট পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের চার লেনের রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে চালু করে দেয়া হয়েছে। ১৫.২ কিলোমিটার আউটার রিং রোড এবং পাঁচ কিলোমিটারের টোল রোড ব্যবহার করে যে কেউ ইচ্ছে করলেই পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পৌঁছাতে পারছে।
অপরদিকে ফৌজদারহাট থেকে টোল রোড ধরে রাসমনি ঘাটের কাছ পর্যন্ত গিয়ে আউটার রিং রোড ব্যবহার করে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে পতেঙ্গায়। নগরীর বন্দরকেন্দ্রিক যানজট এড়িয়ে দ্রুত সময়ে বিমানবন্দরসহ সন্নিহিত এলাকায় যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন কন্টেনার মুভার, কাভার্ড ভ্যান, ট্রাকসহ শত শত গাড়ি রাস্তাটি ব্যবহার করছে। একই সাথে চলছে প্রাইভেট কারও। ইতঃপূর্বে বিভিন্ন সময় টোল রোডে ‘ঝড় তোলা গতিতে’ গাড়ি চালানো হতো। আউটার রিং রোড চালু হওয়ার পর একই কাজ চলছে এই সড়কেও। পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটার দীর্ঘ ৮৪ ফুট প্রস্থ রাস্তাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট উঁচু। দৃষ্টিনন্দন রাস্তাটিতে প্রতিদিন বেপরোয়া গাড়ির চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্পের পরিচালক এবং সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস দৈনিক আজাদীকে জানান, রাস্তাটির কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ। বাকি কাজও দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। করোনার কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে এখন গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে বড় কোনো সমস্যা নেই। ওয়ানওয়ে রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য প্রায় পুরোপুরি প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
সড়কটি নিয়মিত ব্যবহারকারীরা জানান, রাস্তাটিতে প্রতিদিন শত শত গাড়ি চলাচল করলেও ট্রাফিক পুলিশের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যার যেভাবে ইচ্ছে রাস্তাটিতে গাড়ি চালান। এতে প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল নগর পুলিশের শীর্ষ একজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়নি। ট্রাফিক (পশ্চিম) বিভাগের একজন টিআইর নেতৃত্বে একটি টিম টোল রোড এবং রিং রোড যেখানে মিলেছে সেখানে অবস্থান করে। কোনো ধরনের যানজট লাগলে সরানোর চেষ্টা করে। তবে পুরো রাস্তাটিতে ট্রাফিক পুলিশের কোনো কার্যক্রম শুরু না হলেও বিভিন্ন পয়েন্টে থানা পুলিশের নিয়মিত টহল চলছে বলে জানান তিনি।