পঞ্চাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার প্রতিযোগী নিয়ে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এর টেক ফেস্ট ২০২৫ গতকাল শুরু হয়েছে। আইআইইউসির এটা ১৬ তম প্রযুক্তি উৎসব।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় কুমিরাস্থ নিজস্ব ক্যাম্পাসে আইআইইউসি’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৮ দিনব্যাপী এই টেক ফেস্ট–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। গেস্ট অব অনার ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বাংলাদেশ এর ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ আলম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন এবং টেক ফেস্ট–২০২৫ অর্গানাইজিং কমিটির কনভেনার প্রফেসর মোহাম্মদ সামসুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন আইআইইউসি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান, আইআইইউসি‘র ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং আইআইইউসি‘র রেজিস্ট্রার কর্নেল মোহাম্মদ কাশেম পিএসসি (অবঃ)। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সিসিই বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর রাজু আহমেদ, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান কাজী আশফাক আহমেদ চৌধুরী এবং আকিজ গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং সাজ্জাদুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এ যুগ হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের যুগ। এআই এখন চিকিৎসা, প্রকৌশল, ব্যবসা, গবেষণা, এমনকি দৈনন্দিন জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলছে। তাই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষার্থীদের এআই–এ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শুধু পড়াশোনার পাঠ্যবই নয়, প্রযুক্তির সামপ্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে হবে, নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আসল শক্তি হলো শেখার সুযোগ আর ইতিবাচক মনোভাব। আমাদের জীবন খুব সংক্ষিপ্ত, তাই এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের অনেক বড় কাজ করে যেতে হবে। প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছাত্রদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে বড় স্বপ্ন দেখার মানসিকতা থাকতে হবে। জীবনে হতাশ হওয়া যাবে না। ব্যর্থতা আসবে, চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখে এগিয়ে যেতে পারলেই সাফল্য নিশ্চিত। এই ক্যাম্পাসে এসে সত্যিই আমার খুব ভালো লেগেছে। এটি একটি পরিপূর্ণ ক্যাম্পাস পরিবেশ, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ, সব মিলিয়ে শিক্ষার এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এখানে বিরাজমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বাংলাদেশ এর ভাইস–চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ বলেন, সরকারী–বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বলে তুলনা করতে ও মানতে আমি রাজি নই। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মানেই বিশ্ববিদ্যালয়। দুটোই জ্ঞান সৃষ্টি ও চর্চার কেন্দ্র। তিনি বলেন, এই যুগে হাত গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। ছয় মাস পরপর নতুন প্রযুক্তি আসছে। এই প্রযুক্তি আয়ত্ত করতে পারলে দেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে আইআইইউসি’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেন, মানুষ যা চায়, তা সবসময় পায় না। বরং মানুষ পায় তার কর্মফলের প্রতিফলন। আপনি যতটুকু পরিশ্রম করবেন, ঠিক ততটুকুই অর্জন করবেন।
উল্লেখ্য এই টেক ফেস্টের ১৮টি ইভেন্টে দেশের বিভিন্ন সরকারী–বেসরকারী অর্ধ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করছে। ১৮টি ইভেন্টের প্রতিযোগিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইন্টার–ইউনিভার্সিটি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, ইন্টার–ইউনিভার্সিটি হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা, ইন্টার–ইউনিভার্সিটি আইডিয়া জেনারেশন প্রতিযোগিতা, ইন্টার–ইউনিভার্সিটি লাইন ফলোয়িং রোবট প্রতিযোগিতা, ইন্টার–ইউনিভার্সিটি পোস্টার প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।












