ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের অস্বাভাবিক ঋণ বিতরণের তিনটি খবর নজরে আনার পর রিট আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এ পরামর্শ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির ঢাকার একটি বাংলা এবং দুইটি ইংরেজি দৈনিকে ইসলামী ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়া নিয়ে তিনটি খবর নজরে এনে আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চান। তখন আদালত তাকে নিয়মিত রিট আবেদন করার পরামর্শ দেয় বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। কখন রিট দায়ের করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পড়াশোনা করছি, লিখছি। এর আগে শিশির মনির ফেসবুকে লিখেন, ইসলামী ব্যাংকের বিষয়টি আদালতের নজরে আনলাম। মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন দায়ের করে আসতে বলেছেন। ইনশাল্লাহ তাই করব। আদালতের পরামর্শের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবেদন তিনটি উপস্থাপন করে আমি আদালতকে বলেছিলাম, অনেক মামলা আপনাদের এখানে আসে ঘটনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর। এটাতে প্রিভেন্টিভ কিছু করা যায় কি না? এখনও কোনও উদ্যোগ নেওয়া গেলে এখনও কিছু সেইভ করা যাবে। তখন আদালত বলেন, প্রপার রিট ফাইল করে আসেন। খবর বিডিনিউজের।
ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে ঢাকার একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর গত ২৭ নভেম্বর ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর আবেদন করেন পাঁচ ব্যক্তি, যাদের মধ্যে শিশির মনিরও রয়েছেন। সেই আবেদনে তারা নিজেদেরকে ইসলামী ব্যাংকের নিয়মিত গ্রাহক হিসেবে উল্লেখ করেন, ব্যাংকের আমানতকারী হিসাবে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বীকৃত মতে বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। এমতাবস্থায় এই ধরনের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনে আমরা সংক্ষুব্ধ। তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে সেই আবেদনে অনুরোধ করা হয়। এরপর বুধবার তা আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী শিশির মনির।
ইসলামী ব্যাংক থেকে শুধু নভেম্বরেই ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য দিয়ে গত ২৪ নভেম্বর ‘ইসলামী ব্যাংকে ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ঢাকার বাংলা দৈনিকটি। এ প্রতিবেদনে নিয়ম ভেঙে ওই ব্যাংক থেকে চলতি বছর নামসর্বস্ব আটটি কোম্পানি ঋণের নামে বড় অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যেই বুধবার ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিক বছর কয়েক আগে মালিকানা বদল নিয়ে আলোচনায় থাকা ইসলামী ব্যাংক থেকে চট্টগ্রাম ভিত্তিক ‘এস আলম গ্রুপ একক কোম্পানি হিসেবে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে’ বলে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।