অসাংবিধানিক আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না : সালাহউদ্দিন

| শুক্রবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৭:১২ পূর্বাহ্ণ

কোনো দলের ‘অসাংবিধানিক আবদার’ মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলছেন, যারা আইনকানুন মেনে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চায়, তাদের প্রতি আহ্বান করব, কোনো রাজনৈতিক দলের অরাজনৈতিক, অবৈধ, অসাংবিধানিককোনো রকমের আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না। আমাদেরকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় থাকতে হবে। এই সরকার যে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার সরকার, সেটা প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বহুবার তার বক্তব্যে বলেছেন। এই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই আইনানুগভাবে ভবিষ্যতে এ রাষ্ট্রকে আইনের শাসনের রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।

ঢাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা যদি শুধু বলি যে, আইনের শাসনের রাষ্ট্র হবে, এই আইনের শাসনের রাষ্ট্রটা আমাদের প্র্যাকটিসে দেখাতে হবে, মুখে বললে হবে না। আমরা যেটা প্রস্তাব করেছি যে, ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিকতা বিলোপ করার জন্য কোনো ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এর মাধ্যমে আপনাদের সামনে নিশ্চয়ই স্পষ্ট হচ্ছে যে, রাষ্ট্রে ভবিষ্যতে কোনো দিন আর স্বৈরাচারের উদ্ভব হবে না। ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিকতা, রাজনৈতিক বা দলীয় স্বৈরতান্ত্রিকতা বা সাংবিধানিক অথবা সংসদীয় যেকোন স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব বা ফ্যাসিস্টের উদ্ভব হওয়ার আর সুযোগ নেই। এগুলো বিলোপ করতে হবে আমাদের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। আর আপনারা (আইনজীবীরা) হচ্ছেন সেটার গার্জিয়ানরক্ষক এবং আপনাদেরকে এই ভূমিকাটা পালন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট বৃটিশ ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের’ ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ সভা হয়।

পিআর হচ্ছে স্থায়ী অস্থিরতা

সালাহউদ্দিন বলেন, পিআর কী? আমার কাছে আজ পর্যন্ত প্রোপোশনেট রেপপ্রেজেটেটিভ সিস্টেমের নির্বাচন (পিআর) পৃথিবীতে যেখানে চালু আছে, তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে যেটা বলা যায়, পিআর মানে হচ্ছে, স্থায়ী অস্থিরতা, যেটার সর্বশেষ অভিজ্ঞতা হচ্ছে নেপাল। আজকে রুহুল কুদ্দস কাজল সাহেব পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, যেখানে পিআরের অভিজ্ঞতা আছে তার একটা গবেষণাধর্মী বিশ্লেষণধর্মী বক্তৃতা দিয়েছেন। আমরা খুব সমৃদ্ধ হয়েছি। তাতে করে দেখা যায়, এর মাধ্যমে কোথাও এক দেড় বছর লেগে যায় শুধু সরকার গঠন করতে। কোনো রকমে সরকার গঠন করতে পারলেও স্থায়িত্ব হয়ত কয়েক মাস বা বছর হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এটা কারা চালু করতে চাচ্ছে, তাদের পেছনের উদ্দেশ্য কী? একটা উদ্দেশ্য তো অবশ্যই আছে, যেন কিছু আসন বেশি পায়। আরেকটা উদ্দেশ্য আছে, বাংলাদেশে সবসময় যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকে এবং সরকার ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা না আসে।

তিনি বলেন, তাতে কাদের লাভ? দেশে সবসময় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকলে যারা লাভজনক পর্যায়ে থাকবে, তাদেরই লাভ। তার মানে আমাদের পার্শ্ববর্তী কিছু দেশ আছে, যারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা চায় না, যারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চায় না, যারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায় না। কেন চায় না, সেটা তাদের স্বার্থ জড়িত আছে। বাংলাদেশে যদি সবসময় অনৈক্য থাকে, অস্থিতিশীলতা থাকে, তাহলে শেখ হাসিনার মত আরেকটা ফ্যাসিস্টের উদয় হতে পারে এবং তাদের মধ্য দিয়ে তাদের সমস্ত স্বার্থ আদায় হতে পারে অথবা দুর্বল সরকারের কাছে যা কিছুই দাবি করা যাবে, সমস্ত দাবি আদায় করা যাবে। আমরা কি সেটা চাই? আমাদের জনগণের অভিপ্রায় কী?

সংগঠনের আহ্বায়ক ওয়াসি পারভেজ তাহসিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও রাগিব রউফ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিউ ইয়র্কে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা আখতারের
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচনে কেউ ফাউল করতে নামবে না, আশায় সিইসি